মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে ক্ষুব্ধ তৃণমূল, সুপ্রিম কোর্ট অবধি যাওয়ার হুমকি মমতার
রিপোর্টের কেস টু কেস জবাব দিতে জেলা থেকে তথ্য জোগাড় করছে নবান্ন
এতদিন ধরে শাসক বনাম বিরোধী যুদ্ধ চলে আসছে পশ্চিমবঙ্গের কিন্তু এবারে যুদ্ধ শুরু হলো শাসকের সঙ্গে মানবাধিকার কমিশনের। সম্প্রতি প্রকাশিত মানবাধিকার কমিশনের একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছে ভোট পরবর্তী হিংসায় পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। এবং ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে হাইকোর্টে রিপোর্টে তৃণমূল কংগ্রেসকে সরাসরি কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। এবারে এই রিপোর্টের পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করলো তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, রিপোর্টে উল্লেখিত প্রত্যেকটি ঘটনা ধরে ধরে এবারে উত্তর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে সরাসরি জানানো হয়েছে রাজ্যে বর্তমানে আইনের শাসন নয় বরং চলছে শাসকের আইন। এই রিপোর্টের সরাসরি জানানো হয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ভোট পরবর্তী হিংসায় সরাসরি মদদ দিচ্ছে। ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার হচ্ছে বিরোধী দলের সমর্থক এবং নেতারা। স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা এই মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট নিয়ে করা বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সমস্ত জেলার পুলিশকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আর এবারে সেই রিপোর্ট এর পাল্টা জবাব দিতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল নেতাদের নাম উল্লেখ থাকায় নবান্ন খুব একটা ভালো চোখে দেখছে না এই মামলা। তাদের দাবি, এই কমিটিতে এমন লোক রয়েছেন তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজেপি হিসেবে পরিচয় দেন। এই কারণে, তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি এই রিপোর্ট সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
২২ শে জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা। এই কারণে এবার কার্যত প্রত্যেকটি রিপোর্ট নিয়ে কেস টু কেস জবাব দিতে জেলা থেকে তথ্য নেওয়ার পথে চলেছে নবান্ন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, "কয়েকটি সংস্থার অপব্যবহার করে বাংলাকে যেভাবে বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।" রিপোর্টে যেভাবে রাজ্যের মন্ত্রী এবং বিধায়কদের একজন দাগি দুষ্কৃতী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। দরকার পড়লে মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই যে সমস্ত নেতা মন্ত্রীদের নাম উল্লেখ রয়েছে সেই তালিকায় তাদের আলাদা আলাদা করে মানহানির মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। অর্থাৎ এতদিন ধরে শুধুমাত্র চলছিল শাসক এবং বিরোধী মধ্যে তরজা। কিন্তু এবারে তাদের দ্বন্দ্বের মধ্যে শামিল খোদ মানবাধিকার কমিশন। রাজ্যে আইনের শাসন চলে নাকি শাসকের আইন, সেটাই মূল আলোচ্য।