আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হুমকি, গ্রেফতার চিকিৎসক-সহ তিন
ধৃত চিকিৎসক জানিয়েছেন, তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব এবং মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুনের হুমকি দেওয়া চিঠি পাঠিয়ে গ্রেফতার এক চিকিৎসক-সহ তিন ব্যক্তি। ধৃত চিকিৎসক জেরায় ফাঁস করেছেন চাঞ্চল্যকর তথ্য। তিনি জানিয়েছেন, শুধু আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ই নন, ঐ দিনেই তিনি হুমকির চিঠি পাথিয়েছিলেন আরও সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে। পুলিশি জেরায় তিনি এও দাবী করেন, তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং বিগত দু’বছর ধরে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হুমকির চিঠি পাঠানোই তাঁর ‘অভ্যাস’। পুলিশ আপাতত খতিয়ে দেখছে ধৃত চিকিৎসকের মেডিক্যাল হিস্ট্রি।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২৬ অক্টোবর। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একটি চিঠি আসে। তাতে লেখা ছিল, ‘আপনার স্বামীকে খুন করা হবে। আপনার স্বামীকে কেউ বাঁচাতে পারবে না’। চিঠি পেয়েই আলাপনবাবু দ্বারস্থ হন লালবাজারের। শুরু হয় তদন্ত। হুমকি চিঠি দেওয়ার ঘটনায় তাঁরা গ্রেফতার করেন যাদবপুর এলাকার এক বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক এবং একটি বেসরকারি হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ডঃ অরিন্দম সেনকে। এছাড়াও গ্রেফতার করা হয় তাঁর গাড়ির চালক রমেশ সাউ এবং রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের জনৈক টাইপিস্ট বিজয়কুমার কয়ালকে।
তদন্তে তাঁরা জানতে পেরেছিলেন, আলাপনবাবুকে গত ২৫ অক্টোবর শরৎ বোস রোডের পোস্ট অফিস থেকে স্পিড পোস্টে পাঠানো হয় হুমকি চিঠি। একইদিনে স্পিডপোস্টে হুমকি চিঠি পাঠানো হয় মেডিক্যাল এডুকেশনের ডিরেক্টর, সায়েন্স সেক্রেটারি, এনআরএস হাসপাতালের অধ্যক্ষ, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও। তদন্তে তাঁরা এও জানতে পেরেছেন, আগেও বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিদের একই ধরনের হুমকির চিঠি পাঠিয়েছেন ধৃত চিকিৎসক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন যাদবপুরে তাঁর হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসকও।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের কর্মী গৌরহরি মিশ্র তাঁর প্রতিবেশী। দিন কয়েক আগে তাঁর স্ত্রী তাঁকে কটূক্তি করেন। তারই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তিনি গৌরহরিবাবুর নাম করে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে খুনের হুমকি দেন। কয়েক বছর আগে স্ত্রীর সাথে বিবাহবিচ্ছেদ হয় অভিযুক্ত চিকিৎসকের। জানা গেছে, তাঁর বাবা ডঃ সুনীলচন্দ্র সেনও চিকিৎসক ছিলেন। তাঁর মা অধ্যাপনার সাথে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে পুলিশের হেফাজতেই আছেন ধৃত চিকিৎসক। তাঁর বাকি চিঠিগুলিকেও উদ্ধার করে খতিয়ে দেখছে পুলিশ।