মুকুলের অপসারণের দাবি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন শুভেন্দু, চাপে তৃণমূল
বিরোধী দলনেতার পদ ছেড়ে দেবেন শুভেন্দু, কিন্তু কাকে? নিজেই জানালেন ভবানীপুরে প্রচারে এসে
কলকাতা হাইকোর্টে মুকুল রায়কে বিধানসভা থেকে বিতাড়িত করার দাবি নিয়ে এবার একটি মামলা দায়ের করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যে বিধানসভা ভোট মিটে যাওয়ার পরেই পার্টি বদল করে বিজেপি থেকে তৃণমূলে চলে আসেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায়। তবে এখনো পর্যন্ত যেহেতু তিনি বিরোধী দলের বিধায়ক রয়েছেন তাই তাকে পাবলিক অ্যাকাউন্ট কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকেই রীতিমতো মুকুল রায়ের অপসারণ নিয়ে গর্জে উঠেছিল বিরোধী দল বিজেপি। বারংবার তারা বিধানসভার স্পিকারের দরবারে গিয়েছে মুকুলের অপসারণের দাবি নিয়ে। এখনো পর্যন্ত বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এই ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করায় এবারে কার্যত একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দলবদল বিরোধী আইন অনুসারে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন শুভেন্দু।
অন্যদিকে, আজকে ভবানীপুরে বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়ালের হয়ে প্রচারে গিয়ে মমতার বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন শুভেন্দু অধিকারী। আজকে সকালেই কলকাতার যদুবাবুর বাজার এলাকায় প্রচারে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক তথা বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেই একই জায়গায় সভা করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে, এই সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুধুমাত্র কটাক্ষ করা নয়, বরং তিনি আজকের সভা থেকে আরও যা বললেন তা রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতোই। তিনি আজকে জানিয়ে দিলেন, যদি ভবানীপুর উপনির্বাচন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল জয়ী হতে পারেন তাহলে তিনি তাকে বিরোধী দলনেতার চেয়ার ছেড়ে দেবেন।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে অত্যন্ত কম মার্জিনে পরাজিত হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কারণেই ৬ মাসের মধ্যেই তাকে উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে বিধানসভায় ফিরতে হত। যদিও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরাস্ত হলেও রাজ্যে ফিরে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য ভবানীপুরে উপনির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে কারণেই আবারো মমতাকে হারিয়ে তৃণমূলকে বিপাকে ফেলতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু, ভবানীপুরে মমতাকে হারানো খুব একটা সহজ নয়। আর এই বিষয়টা বেশ ঠারে ঠারে বুঝেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। কিন্তু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের প্রশ্ন, শুভেন্দুকে বিরোধী দলনেতা চেয়ার থেকে সরানোর ব্যাপারে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্তরে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেটা আঁচ করতে পেরেই কি এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধী দলনেতার আসনের তাসটি বের করলেন শুভেন্দু অধিকারী?