সনাতন কাণ্ড : কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে, জেরবার পুলিশ
ব্রিকস সম্মেলনে যোগ, রাজভবনের ঠিকানা ব্যবহার, লোকসভা ভোটের প্রার্থী, কী নেই সনাতন কাণ্ডে
একেই বলে গোদের উপর বিষফোঁড়া! একদিকে দেবাঞ্জন, অপরদিকে সনাতন, দুই-য়ে মিলে যেন জালিয়াতির গুদামঘর। রাজ্যে দেবাঞ্জন (Debanjan Deb) কাণ্ডের রেশ মিটতে না মিটতেই সামনে এসেছে সনাতন রায়চৌধুরীর (Sanatan Roychoudhury) জালিয়াতি কাণ্ড। পর্যবেক্ষক একাংশের মত, সনাতন তো দেবাঞ্জনের এক কাঠি উপরে। তদন্তে নেমে যেভাবে একের পর এক তথ্য উঠে আসছে, তাতে গোয়েন্দাদের তো চক্ষু চড়কগাছ।
সনাতন রায়চৌধুরী কাণ্ডে তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশ সনাতনের সঙ্গে বিজেপি যোগের খোঁজ পেয়েছে। দেখা গেছে সনাতন রায়চৌধুরীর কাছে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার রসিদ। যা নিয়ে কলকাতা পুলিশ বিজেপিকে চিঠি পাঠাচ্ছে বলে সূত্রের খবর।এমনকি ২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে আয়োজিত ব্রিকস সম্মেলনেও ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি, তা-ও আবার খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশে! জেরায় সনাতন নিজেই তা কবুল করেছেন বলে সূত্রের খবর।
শুধু তাই নয়, গড়িয়াহাটে জমি কেনাবেচার সময় রাজভবনের ঠিকানা ব্যবহার করেছিলেন সনাতন। এতদিন রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কৌঁসুলি সেজে প্রতারণামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। যদিও সিবিআইয়ের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সনাতন রায়চৌধুরীর সঙ্গে তাদের কোন যোগসূত্র নেই। এখন প্রশ্ন উঠেছে একজন সাধারণ মানুষ কীভাবে রাজভবনের মতো ঠিকানা ব্যবহার করতে পারেন!
জালিয়াতির এখানেই শেষ নেই। জানা যাচ্ছে এই অভিযুক্ত সনাতন রায়চৌধুরী একবার নাকি নির্বাচনেও দাঁড়িয়েছিলেন। ২০০৯ সালে লোক জনশক্তি (এলজেপি) পার্টির হয়ে দমদম থেকে লোকসভা ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। নির্বাচন কমিশনের নথি ঘেঁটে, এ বার এমনই তথ্য সামনে এসেছে বলে সূত্রের খবর। নিজের মায়ের মৃত্যুর সময়ও নাকি নীলবাতি হাঁকিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলেন। আদতে বহরমপুরের খাগড়া তেঘরিয়ার বাসিন্দা সনাতন। যদিও বরানগরের মণ্ডল পাড়ায় থাকতেন। একজন সাধারণ মানুষ কীভাবে এত প্রতারণামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত হলেন, তাই-ই এখন ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের। এ তো বলিউডের 'স্পেশাল ২৬' সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানাচ্ছে!