"ত্রিপুরায় হামলা হচ্ছে অমিত শাহের নির্দেশে", বিস্ফোরক মন্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
আজ সকালে এসএসকেএম হাসপাতালে সুদীপ রাহা ও জয়া দত্তকে দেখতে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
গতকাল থেকেই খবরের শিরোনামে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) ত্রিপুরা (Tripura) সফরের ইতিবৃত্ত। গত শনিবার তৃণমূল যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহা, জয়া দত্ত প্রমুখরা ত্রিপুরায় সাংগঠনিক কাজে গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁদের গাড়ি আটকে হামলা চালানো হয় এবং সন্ধ্যেবেলা রাস্তার মাঝেই ফাঁদ পেতে আক্রমণ করা হয়। কোনোরকমে তা থেকে বেঁচে বেরোলেও রবিবার সকালে মহামারী আইন ভঙ্গের মিথ্যা অভিযোগ চাপিয়ে ১৪ জনকে গ্রেফতার করে ত্রিপুরা পুলিশ। তাঁদের গ্রেফতারের খবর শুনেই তড়িঘড়ি ত্রিপুরায় উড়ে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর সঙ্গে গিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ, বিধায়ক তথা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং নেত্রী দোলা সেন। খোয়াই থানায় দীর্ঘক্ষন বচসার পর ধৃতদের আদালতে তোলা হয় এবং আদালত থেকে তাঁদের নির্দোষ ঘোষণা করে। গতকাল রাতেই দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহা, জয়া দত্ত প্রমূখদের নিয়ে কলকাতায় চলে আসেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।
রাতে কলকাতায় ফিরে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সুদীপ রাহা ও জয়া দত্তকে। দেবাংশু ভট্টাচার্যকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে এসএসকেএম উর্ডবান ওয়ার্ডের ১০৩ নম্বর কেবিনে ভর্তি রয়েছেন সুদীপ। হামলার সময় ইটের ঘায়ে তাঁর মাথা ফেটে গিয়েছিল। ইতিমধ্যেই এমআরআই এবং সিটিস্ক্যান করা হয়েছে। বিশেষ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি। অন্যদিকে জয়া দত্ত ভর্তি রয়েছেন উর্ডবান ওয়ার্ডের ২০৩ নম্বর ওয়ার্ডে। তাঁদেরকে দেখতে আজ অর্থাৎ সোমবার সকালে হাসপাতালে গিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সকাল ১১ টা ১৫ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছান। তাঁর সাথে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। হাসপাতালে পৌঁছে সরাসরি তিনি সুদীপ রাহা এবং জয়া দত্তর সাথে দেখা করতে যান।
হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপিশাসিত ত্রিপুরার শাসকদলের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি কটাক্ষ করে বলেছেন, "ওদেরকে দেখলাম। বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। জয়ার গাল মেরে ফাটিয়ে দিয়েছে। সুদীপের মাথা ফেটে গেছে। কাল থেকে ও অনেকবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। পুলিশের সামনেই মারধর করা হয়েছে। ওদের থানাতে ৩৬ ঘণ্টা বসিয়ে রেখে এক ফোঁটা জল অবধি খেতে দেয়নি। গুন্ডারাজ চলছে ত্রিপুরায়।" এছাড়াও তিনি বলেছেন, "এই সমস্ত কাজ করানোর ক্ষমতা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের নেই। সব হচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশে। এরআগে অসমে তৃণমূলের লোকজনদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এবার ত্রিপুরায় যারাই যাচ্ছে তারাই আক্রান্ত হচ্ছে। কিছুদিন আগে অভিষেকের গাড়িতে হামলা হয়েছিল। এখন ত্রিপুরায় যাওয়ার জন্য বিমান ভাড়া বা হেলিকপ্টার ভাড়া করতে গেলেও বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিজেপি তৃণমূলকে কোনভাবেই ত্রিপুরায় যেতে দিতে চাইছে না।"