এই আকালেও বেঁচে আছে মানবিকতা
শিক্ষিকাদের সাহায্যে পড়াশোনা চালাতে পারছেন দুঃস্থ ছাত্রীরা
করোনা বিপর্যয়ের এই অন্যরকম দিনগুলিতে পড়াশোনা চালানো অনেকে ছাত্রছাত্রীর কাছেই অসম্ভব হয়ে উঠেছে৷ স্কুল–কলেজ বন্ধ থাকায় অনেক জায়গায় চলছে অনলাইন ক্লাস৷ কিন্তু সেই ক্লাসের পড়ুয়া হতে হলে তো দরকার একটা স্মার্টফোন৷ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে প্রয়োজন ডেটা–প্যাক৷ সে সব জোগাড়ের পয়সা কোথায় দুঃস্থ পরিবারগুলির বাবা–মায়েদের হাতে তাই বন্ধ পড়াশোনা৷ চোখের জল বুকে চেপে ছেলেমেয়েগুলির কেউ হাটে বসে ফলমূল বেচছে, কেউ বা কাজ করতে যাচ্ছে ইটভাটায় বা চৌরাস্তার মোড়ে চায়ের দোকানে৷
কিন্তু অন্যরকমের গল্পও আছে৷ দমদমের রামকৃষ্ণ সারদা মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যাভবনের শিক্ষিকারা সৃষ্টি করেছেন সে কাহিনি৷ এই কলেজের অনেক ছাত্রীরই স্মার্টফোন নেই, নেই ডেটা–প্যাক ভরার আর্থিক সামর্থ্য৷ কিন্তু তা বলে পড়াশোনা বন্ধ হয়নি তাঁদের৷ শিক্ষিকারাই হাসিমুখে জুগিয়ে চলেছেন সে–সব৷ এই কলেজের স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার কমিটির অন্যতম আহ্বায়ক চৈতী মিত্র জানিয়েছেন, সরকারি বৃত্তি ছাড়াও এখানে গরিব মেধাবী ছাত্রীদের জন্য নানা বৃত্তির ব্যবস্থা আছে৷ একটি তহবিলও গড়া হয়েছে, যা থেকে করোনা আবহে হাসি ফোটানো যাচ্ছে পড়তে চাওয়া ছাত্রীদের মুখে৷ শুধু শিক্ষিকারাই নন, কলেজের প্রাক্তনীরা থেকে শুরু করে পরিচিত মানুষজন সহ সকলের সহযোগিতাতেই চলছে এই কাজ৷
অনলাইন পড়াশোনা যখন অবস্থাপন্ন ও দরিদ্র– এই দুই শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে গড়ে দিচ্ছে দুস্তর ব্যবধান, তখন বিদ্যাভবনের শিক্ষিকাদের এই চমৎকার উদ্যোগ কালো মেঘের আড়ালে সূর্যের উজ্জ্বল ছটায় আনন্দে মন ভরিয়ে দেয়৷