প্রসূতি এবং গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিক্ষোভ এসএসকেএমে, করা হল ভাংচুর
উঠল চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ
এক প্রসূতি এবং তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যুকে কেন্দ্র উত্তেজনা চরমে পৌঁছাল এসএসকেএম হাসপাতালে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মৃতার বিক্ষুব্ধ পরিজনেরা ভাংচুর চালায় হাসপাতালে। মৃতার পরিবারের দাবী, চিকিৎসক এবং হাসপাতালের ‘গাফিলতি’র জেরেই ঘটেছে এমন দুর্ঘটনা। তবে গাফিলতির অভিযোগ মানতে নারাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এবিষয়ে হাসপাতালের সুপার কড়া অবস্থান গ্রহন করে বলেছেন, কোনও চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীর উপরে প্রসূতির পরিবারের লোকজন হামলা চালালে তাঁদের রেয়াত করা হবেনা।
সূত্রের খবর, মৃতা প্রসূতির নাম শেখ শাহানাজ। তিনি কলকাতার তোপসিয়ার বাসিন্দা। আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন ঐ মহিলা। জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত্রি সাড়ে দশ’টার সময় আচমকাই পেটে তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করেন শাহানাজ। পরিবারের লোকেরা তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে এসে জরুরি বিভাগে ভর্তি করে দেন। তাঁদের অভিযোগ, জরুরি বিভাগে ভর্তি করলেও কোনও কাজ হয়নি। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা স্ট্রেচারেই পড়ে থেকেই যন্ত্রণা সহ্য করে যান প্রসূতি। বার বার ডেকেও মেলেনি কোনও চিকিৎসকের দেখা, এমনই গুরুতর অভিযোগ সামনে এনেছেন মৃতার পরিবার।
তবে মধ্যরাতে তাঁকে অবশেষে নিয়ে যাওয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে। সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, মৃত সন্তান প্রসব করেন ঐ মহিলা। এই খবর তাঁর পরিজনদের জানানো হয়। যদিও সে সময়ে আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি ছিল শাহানেজেরও। শনিবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর। ঘরের মেয়ের মৃত্যুসংবাদ শুনে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন মহিলার পরিজনেরা। ভিড় জমতে থাকে হাসপাতালে। অভিযোগ উঠেছে, মৃতার ক্ষিপ্ত পরিজনেরা ভাংচুর চালায় হাসপাতালে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে ভবানীপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
যদিও মৃতার পরিবারের অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন হাসপাতালের সুপার পীযূষ রায়। তাঁর দাবী, সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসাই হয়েছে প্রসূতির। হাসপাতালে আসার আগে থেকেই মহিলার শারীরিক অবস্থা যথেষ্ট খারাপ ছিল। আর সে কারনেই গর্ভস্থ সন্তান-সহ মৃত্যু হয়েছে তাঁর। পাশাপাশি তিনি এদিন হামলাকারীদের উদ্দেশ্যে কঠোরভাবে জানিয়ে দেন, কেউ চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হামলা চালালে তাঁর বিরুদ্ধে করা পদক্ষেপ গ্রহন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।