থিম আছে বটে, তবে "ওস্তাদের মার শেষরাতে", টেক্কা দিল ফের সাবেকিয়ানাই
এ বছরের মত পুজো শেষ, থিম নাকি সাবেকিয়ানা...এগিয়ে রইল কে? পরিদর্শক সেই উত্তর খুঁজতেই সামিল পুজো পরিক্রমায়।
থিম বনাম সাবেকিয়ানা— এ লড়াই চলছেই। তবে, করোনা পরিস্থিতিতে বাজেট কমাতে অনেক পুজো মণ্ডপই থিমের পুজো ছেড়ে সাবেকি পুজোর দিকে ঝুঁকেছেন। আবার, বেশ কিছু পুজো এবছর দুটি বিষয়কেই সমানতালে বজায় রাখতে চেয়েছেন।
হাওড়ার উল্লেখযোগ্য কিছু পুজো মণ্ডপ ঘুরে এবারে তাই বিচিত্র অভিজ্ঞতা। শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের সন্নিকটে উল্লেখযোগ্য দু'টি পুজো মণ্ডপে হাজির হয়েছিলাম আমরা। অধিবাসীবৃন্দ পরিচালিত "মধুসূদন দাস লেন, বাই লেন সর্বজনীন দুর্গোৎসব" এর পুজো এ বছর ৩৩তম বর্ষে পদার্পণ করল। এখানকার থিম "খেয়া",......."বর্তমান সময়ে যেভাবে মহামারী,লকডাউন, আমফান, ইয়াসের প্রভাবে বিপর্যস্ত সমাজ,তার থেকে মুক্ত নয় উপকূলের জেলেদের জীবন, বরং তা আরও ভয়ানক। নানা সংকটের ভেতর দিয়ে অতিক্রান্ত এই জীবনের হিসেব মেলানোটাই যেন কঠিন,তবুও ভয়কে দূরে ঠেলে নদীর বুকে ভেসে থাকা কিছু আশা-আকাঙ্খাকে সঙ্গী করে...সেই নিয়েই আমাদের ভাবনা।"―জানালেন অন্যতম সম্পাদক পার্থসারথী প্রামাণিক।
এখানকার পুজোকমিটির সদস্যরা মণ্ডপ সজ্জা ও মাতৃ প্রতিমায় থিমকে গুরুত্ব দিলেও পুজোর আচার,রীতি-নীতি সবেতেই সাবেকিয়ানাকে বজায় রেখেছেন। তাঁদের মতে, থিম ও সাবেকিয়ানার কোনো দ্বন্দ্ব নেই। কিছুদূর পায়ে পায়ে এগোলেই পড়বে এক ঐতিহ্যমণ্ডিত পুজো, যাঁরা থিমের প্রতিযোগিতায় বিন্দুমাত্র বিশ্বাসী নন, ১৯০৫ এর বঙ্গভঙ্গের সময় থেকে পুজো করে আসছেন মাঝেরহাট দুর্গোৎসব কমিটি, ১১৭ বছরের ঐতিহ্যকে বহন করে চলেছেন তাঁরা। মাতৃ প্রতিমা দীর্ঘ ১০০ বছর ধরে একচালার হলেও বর্তমানে সামান্য পরিবর্তিত হয়েছে। তবে, নিয়ম, আচার-বিধি আগের মতই রক্ষা করছেন তাঁরা।
তবে, এ বছর সম্পূর্ণভাবে থিম পুজো থেকে সরে সাবেকিয়ানাকে প্রাধান্য দিয়েছেন শিবপুর নবারুণ সংঘের পুজো, শিবপুর নিমতলা বারোয়ারি। এই দুই পুজো অত্যন্ত জনপ্রিয় মূলতঃ তাদের অভিনব থিমের জন্য। কিন্তু, করোনা আবহে এ বছর কোনো থিম না রেখে পুজোর রীতি-রেওয়াজকেই প্রাধান্য দিতে চেয়েছেন তাঁরা। এই অঞ্চলের অগ্রদূত ক্লাবের পুজোর ক্ষেত্রেও সাবেকিয়ানাই ধরা পড়ল আমাদের চোখে।