অধিকাংশ দাবি মানতে রাজি কেন্দ্রীয় সরকার, আগামীকাল দুপুরে বিক্ষোভ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেবেন কৃষকরা
কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত জানিয়েছেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত সবকিছু ঠিক হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা নিজেদের অবস্থান থেকে সরবেন না
কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি নীতিবিরোধী কৃষক আন্দোলন নিয়ে কার্যত এক বছর ধরে উত্তপ্ত রয়েছে জাতীয় রাজনীতি। তার মধ্যেই গুরু নানকের জন্ম দিনের দিন অর্থাৎ গত সপ্তাহের ১৯ তারিখ লাইভে এসে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছিলেন, তিনটি বিতর্কিত কৃষি বিল প্রত্যাহার করে নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে কৃষকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া হয়েছিল। তার পরেও কৃষকদের সামনে আরো একবার মাথা নোয়ানর সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। চিঠি দিয়ে সংযুক্ত কিষান মোর্চাকে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, কৃষকদের অধিকাংশ দাবি মেনে নিতে রাজি হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য থেকে শুরু করে কৃষকদের উপরের সমস্ত ধরনের মামলা প্রত্যাহার করে নিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার।
কেন্দ্রীয় চিঠি পাওয়ার পর আন্দোলনরত কৃষকদের নেতাদের একটা বড় অংশ তাদের কৃষক আন্দোলন তুলে নেওয়ার পক্ষপাতী হয়েছেন। আগামীকাল কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত এর উপস্থিতিতে এ কৃষক আন্দোলন প্রত্যাহারের সমস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে কৃষক মোর্চার তরফ থেকে। আগামীকাল দুপুর দুটো নাগাদ কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কিষান মোর্চা। কৃষকরা প্রধানমন্ত্রীর মৌখিক আশ্বাসে খুব একটা ভরসা দেখাতে পারেননি বলেই এখনো পর্যন্ত কৃষক আন্দোলন সরাসরিভাবে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
কেন্দ্রীয় সরকার সংসদে বিল পেশ করে সরকারিভাবে আইন প্রত্যাহার করেছিল। কিন্তু তারপরেও কেন্দ্রীয় সরকারের উপরে ভরসা রাখতে পারেননি কৃষকরা। প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী অনুরোধ করলেও অনেক কৃষক মাঠে নামতে রাজি ছিলেন না। সংযুক্ত কিষান মোর্চার তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কৃষি আইন প্রত্যাহার করার ছাড়াও কৃষকদের আরো বেশ কিছু দাবি রয়েছে যেগুলিকে পূরণ করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারের। এই দাবিগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল ন্যুনতম সহায়ক মূল্যের নিশ্চয়তা, কৃষকদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সমস্ত মামলা তুলে নেওয়া, প্রস্তাবিত ইলেকট্রিসিটি সংশোধনী বিল প্রত্যাহার করা সহ ইত্যাদি।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আশ্বাসে এই সমস্ত দাবি মেনে নেওয়া হবে কৃষকদের কল্যাণের জন্য। একইসঙ্গে কৃষকের বিরুদ্ধে সমস্ত মামলা তুলে নেওয়া এবং কৃষকদের ভরসা দেওয়ার জন্য নূন্যতম সহায়ক মূল্য নিশ্চয়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের আসাস পাওয়ার পর জরুরি বৈঠকে বসে সংযুক্ত কিষান মোর্চা জানায় দীর্ঘ বৈঠক করার পর এই সিদ্ধান্তে আসা হয়েছে, আগামীকাল বেলা দুটোর সময় বৈঠক করে কৃষক আন্দোলন প্রত্যাহার করার সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আগামীকালের বৈঠকেই এই সমস্যা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার। অন্যদিকে কৃষকনেতা রাকেশ টিকায়েত জানালেন, "কেন্দ্রীয় সরকার অনেকদিন ধরে এই ধরনের অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত সবকিছু ঠিক হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা নিজের অবস্থান থেকে সরব না।"