কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ‘থাপ্পড়’ মন্তব্যের জের, সান্তাক্রুজে আদিত্যর যুব সেনা এবং বিজেপি কর্মীদের খণ্ডযুদ্ধ
ঘটনায় অসন্তুষ্ট খোদ শিবসেনা নেতা-কর্মীরা
২০১০ সালে তৈরি হওয়া থেকে শুরু করে এতদিন পর্যন্ত, মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরের ছেলে এবং মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী, বিধায়ক আদিত্য ঠাকরে-র ‘যুবসেনা’ মধ্যপন্থায় বিশ্বাসী বলেই পরিচিত ছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নারায়ণ রানের ‘থাপ্পড়’ মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তাঁরা মধ্যপন্থী তকমা ঝেড়ে ফেলে আচমকাই উগ্রপন্থী হয়ে উঠলেন। খণ্ডযুদ্ধ বাঁধল বিজেপি কর্মীদের সাথে। যা থামাতে শেষমেশ লাঠিচার্জ করতে হয় পুলিশকে।
কিছুদিন আগেই কেন্দ্রের ক্যাবিনেট মন্ত্রী নারায়ণ রানে, একটি জনসভায়, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরে'কে ‘থাপ্পড়’ মারবেন বলে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। যার জেরে তুমুল জলঘোলা হয় দেশের রাজনীতিতে। রানের এরকম মন্তব্যের জন্য তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়। কিন্তু তাতেও শান্ত হয়নি শিবসেনা কর্মী-সমর্থকরা। মঙ্গলবার সান্তাক্রুজের জুহু তারা রোডে, নারায়ণ রানের বাড়ির সামনে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন যুবসেনা এবং বিজেপি সমর্থকরা। দুপক্ষ থেকেই পাথরবর্ষণ করা হয় একে অপরকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে।
ঘটনায় জড়িত দুই প্রধান হলেন যুবসেনার সেক্রেটারি বরুন সরদেশি এবং আরেক নেতা রাহুল কানাল। প্রসঙ্গত, আদিত্য ঠাকরের মাসতুতো ভাই বরুন। ঘটনার সূত্রপাত ঘটে যখন যুবসেনার সভাপতি অময় ঘোলে, নারায়ণ রানে-র ছবি দেওয়া একটি ব্যানার তোলেন, যাতে রানে-কে মারাঠি ভাষায় ‘কম্বডি চোর’(মুরগি চোর) বলে লেখা ছিল। রানে আগে পোল্ট্রির ব্যবসা করতেন বলেই তাঁর উদ্দেশ্যে এ জাতীয় মন্তব্য করে ব্যানারটি তোলা হয়। আর এরপরই বিজেপি কর্মীদের সাথে তাঁদের বচসা শুরু হয়, যা শেষ পর্যন্ত হাতাহাতিতে গিয়ে পৌঁছায়।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুটি এফআইআর দায়ের করেছে সান্তাক্রুজ থানার পুলিশ। পুলিশ এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখছে। বোরিভেলি(পূর্ব)-তেও যুব সেনার বিরুদ্ধে একটি এফআইআর করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে মহামারী আইন, বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ছাড়াও বেআইনি জমায়েত এবং উপদ্রবের মতো ধারায় মামলা করা হয়েছে।
যদিও ঘটনাটিকে ভালো চোখে দেখছেন না খোদ শিবসেনার অন্দরেরই কিছু নেতা-কর্মী। তাঁদের মতে, যুব সেনা সবসময়েই নরম্পন্থায় বিশ্বাসী। তাঁরা কখনই ভারতীয় বিদ্যার্থী সেনা(বি ভি এস)-র মতো উগ্র প্রতিবাদ পন্থায় বিশ্বাসী নয়। এরকম ঘটনায় প্রতীত হচ্ছে, যুব সেনা, বিদ্যার্থী সেনারই ভুমিকা পালন করতে উদ্যত হয়েছে। তাঁদের আশঙ্কা, আসন্ন মুম্বই পুরসভা ভোট পর্যন্ত যুব সেনার এরকম রুপই দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।