চীন এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রতি ভারতের মিষ্টি বন্ধুত্ব, বছরের প্রথম দিনেই সৌভ্রাতৃত্বের আমেজ
নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার প্রচেষ্টা ভারতীয় সেনার
সমস্ত দূরত্ব ভুলে আবারো সৌজন্যজ্ঞাপন ভারতীয় সেনা এবং চিন সেনার মধ্যে। পূর্ব লাদাখের হট স্প্রিং এবং দেমচক এলাকায় দেখা গেল একটি বিরল দৃশ্য। নববর্ষের খুশিতে দুটি দেশের মধ্যে সমস্ত রাজনৈতিক ভেদাভেদকে ভুলে গিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং চিন সেনাবাহিনীর সদস্যরা একে অপরকে উপহার দিলেন কিছু প্রিয় জিনিস। গত বছর মে মাস থেকেই লাদাখের দুই দিকেই রাজনৈতিক সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। কিন্তু সেই সব রাজনৈতিক দূরত্ব ঘুচিয়ে দিল আজকের উপহার আদান-প্রদানের ঘটনাটি। একটা অন্য ভূমিকায় আমরা পেলাম ভারতীয় সেনাবাহিনীর জাওয়ানদের।
চীন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে সেনাবাহিনীর তরফ থেকে। করোনাভাইরাস বিধি মেনেই দুই দেশের সেনাবাহিনীর সদস্যরা একে অপরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন এবং হাতে ফুল এবং মিষ্টি তুলে দিলেন। তার সঙ্গেই ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানালেন সেই দেশের বাসিন্দা দের উদ্দেশ্যে। তবে শুধু চিন না, পাকিস্তানে সেনা জওয়ানদের সঙ্গেও শুভেচ্ছা বিনিময় করেছে ভারতীয় সেনা।
ভারত সরকার একাধিকবার দাবি করেছে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে তারা সব সময় ভালো সম্পর্ক রাখতে চায়। ভারতের অখন্ডতা এবং সার্বভৌমত্ব বজায় রাখা ভারতের একমাত্র লক্ষ্য। তবে প্রতিবেশী দেশের সীমান্তে একফোটা জায়গাও ছাড়বে না ভারত। পাকিস্তান এবং চীন সর্বদা ভারতের সঙ্গে কিছু না কিছু সীমান্ত সমস্যায় জড়িয়ে থেকেছে। তাই নতুন বছরের প্রথম দিন দুই প্রতিপক্ষ এবং প্রতিবেশী দেশকে শুভেচ্ছা জানিয়ে নিজেদের বার্তা দিল ভারতীয় সেনা।
ভারতীয় সেনার তরফ থেকে মিষ্টি এবং কিছু উপহার পাঠানো হয়েছে চীনের সেনাবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে। কে কে পাস, ডিবিও, বটলনেক, চুশাল মল্ড, কঙ্কালা, নাথুলা পাস, ডেমচক হটস্প্রিং, কঙ্গরালা, বুমলা এবং ওয়াচা দামাই এলাকায় এই উপহার বিনিময় করেছে ভারতীয় সেনা। অন্যদিকে পাকিস্তান সীমান্তেও নতুন বছরের প্রথম দিনে একই ছবি ধরা পড়েছে। চিলেহানা, তিথওয়াল, ক্রসিং পয়েন্টে ভারতীয় সেনা জওয়ানরা পাকিস্তানে সেনা জওয়ানদের হাতে ফুল এবং মিষ্টি তুলে দিয়ে শুভেচ্ছা জানালেন। পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মধুর এবং শক্তিশালী করার জন্য এর আগেও বহুবার ভারত প্রচেষ্টা চালিয়েছে। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর কিছুটা হলেও শান্তি বিরাজ করছে এখন। বর্তমানে ভারতের মূল লক্ষ্য হলো নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সমস্ত গ্রামে শান্তি বজায় রাখা। অন্যদিকে ভারতীয় সেনার এবং ভারত সরকারের এই প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানিয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। স্থানীয়রা আশা রেখেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের এই সুসম্পর্ক হবে দীর্ঘমেয়াদি এবং নিয়ন্ত্রণ রেখায় এলাকায় শান্তি প্রক্রিয়া হবে আরো দীর্ঘায়িত।