বাড়ির পুরুষ কর্তা নয়, ‘মেয়ে-বৌমার’ নামেই এখানে রাখা হয় বাড়ির নাম
বিদেশ নয়, এদেশেই রয়েছে এমন গ্রাম
‘বাড়ির নামকরন হবে পরিবারের কর্তার নাম অনুযায়ী’ – পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এমনটাই দেখে থাকতে অভ্যস্ত আমরা। তবে এই প্রচলনকে কার্যত নস্যাৎ করছে হরিয়ানা রাজ্যের এক গ্রাম। সেখানে বাড়ির পুরুষ নয়, বরং ‘মেয়ে-বৌমার’ নামেই করা হচ্ছে বাড়ির নামকরন। বাড়ির বাইরে নেমপ্লেটে বসছে বাড়ির মেয়ে কিংবা বৌমার নাম। তাঁদের পরিচয়েই হচ্ছে বাড়ির পরিচয়।
হরিয়ানা রাজ্যের হিসার জেলার অন্তর্গত গ্রাম মাইয়ার। ১৫০০ পরিবারের বাস সেখানে। জনসংখ্যা মেরেকেটে সাত হাজার। বর্তমানে সেখানের প্রতিটি পরিবারের নামকরন করা হয়েছে বাড়ির মেয়ে অথবা বৌমার নামে।
জানা গিয়েছে, ব্যতিক্রমী এই নিয়ম প্রচলনের নেপথ্যে রয়েছেন সুনীল জাগলান নামক জনৈক ব্যক্তি। তিনি বিবিপুর গ্রামের প্রাক্তন সরপঞ্চ। শুধু বাড়ির নেমপ্লেটে বাড়ির মেয়েদের নামই নয়, মহিলাদের জন্য আরও নানান ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ তিনি করে থাকেন প্রায়শই। তিনি জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর দ্বারা প্রচলিত ‘স্বমিত্ব অভিযান’ এবং ‘সেলফি উইথ ডটার’ কর্মসূচী দেখে বিশেষভাবে প্রভাবিত হন তিনি। এর পরেই তিনি সেখানে ‘লাডো স্বভিমান উৎসব’ নামক এক প্রকল্পের সূচনা করেন। তার আওতাতেই গ্রাম থেকে গ্রামে চলে তাঁর উন্নয়নমূলক কর্মসূচী।
সুনীলের কথায়, ‘সেলফি উইথ ডটার ফাউন্ডেশান’ এবং ‘জিন্দাল স্টেইনলেস ফাউন্ডেশান’-এর উদ্যোগে গ্রামে মহিলা ক্ষমতায়নের সূচনা করা হয়েছে। তবে শুধু মায়ার নয়, আশেপাশের গ্রামগুলিতেও নেওয়া হয়েছে একই উদ্যোগ। তাঁর কথানুযায়ী, প্রকল্পটি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রত্যেক গ্রামে একটি করে ‘লাডো টিম’ তৈরি করা হয়েছে।
সুনীলের নেওয়া এমন উদ্যোগে বিশেষভাবে খুশি গ্রামের মেয়ে-বউরা। তাঁদের কথায়, বাড়ির নেমপ্লেটে নিজেদের নাম দেখাটা তাঁদের কাছে একপ্রকার স্বপ্নের সামিল ছিল। তবে সেই আশা অবশেষে বাস্তবে রূপায়িত করেছেন সুনীল। তবে আজ নয়, এই প্রকল্পের সূচনা সুনীল করেছিলেন ২০১৫ সালে। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে ১৭,০০০ টিরও বেশি বাড়ির নেমপ্লেটে বসেছে বাড়ির মেয়ে-বৌমার নাম।