হিন্দু-জৈন-শিখ এলাকা ও মন্দিরের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে গোমাংস বিক্রি নিষিদ্ধ, অসমের নয়া বিল নিয়ে উত্তেজনা
এতে সাম্প্রদায়িক হানাহানি ক্রমেই বাড়বে, মতপ্রকাশ বিরোধী দলনেতার
ফের বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে গোরু। মন্দিরের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে বিক্রি করা যাবেনা গোমাংস ও গোমাংসজাত পণ্য বা খাদ্যসামগ্রী। এখানেই শেষ নয়, একইসাথে হিন্দু, জৈন বা শিখ ও গোমাংস না খাওয়া যেকোনো জনজাতির বসতি এলাকায় এই প্রকার কোনোরূপ কার্যকলাপ চলতে পারবে না, প্রস্তাব দেওয়া হল অসম গো-সুরক্ষা বিল ২০২১ নামক ওই বিলে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা গতদিন বিধানসভায় পেশ করেন এই বিল। গোরু পাচার ও গোহত্যা রোখার জন্য এতদিন বিভিন্ন রাজ্যে নানাবিধ আইন চালু হলেও এই প্রথম গোমাংসের দোকানের ওপর সরাসরি নিষেধাজ্ঞা জারি করতে চলেছে অসমের বিজেপি সরকার।
ঠিক কি বলা হয়েছে ওই বিলে? বলদ, গোরু, বাছুর প্রতিটি প্রাণীর ক্ষেত্রেই এই নির্দেশিকা বহাল থাকবে; ফিট ফর স্লটার সার্টিফিকেট থাকতে হবে, বয়স বিচার না করে গোরু হত্যা করা যাবেনা; আসাম থেকে ভিন্ন রাজ্যে বা অন্য রাজ্য থেকে আসামে গোমাংস রপ্তানি বা আমদানির ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হবে; সরকারের অনুমতিপ্রাপ্ত স্থান ছাড়া কোথাও গোমাংস বিক্রি করা যাবেনা; এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, হিন্দু, জৈন বা শিখ ও গোমাংস না খাওয়া যেকোনো জনজাতির বসতি এলাকা ও মন্দিরের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে গোমাংস বিক্রি করা যাবেনা। আর এই প্রকার নির্দেশিকা জারির পরই দেশজুড়ে বিতর্কের মুখে পড়ল ওই বিল।
অসম বিধানসভার বিরোধী দলনেতা দেবব্রত সাইকিয়া প্রশ্ন তোলেন, এই পাঁচ কিলোমিটার কীসের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে? যেখানে ইচ্ছা পাথর ফেলে ভক্তি দেখিয়ে যে কেউ মন্দির গড়ে ফেলতে পারে। তাই এই বিল কেবলই সাম্প্রদায়িক হানাহানিকে উস্কে দেওয়ার বিল, তাই তীব্র ভর্ৎসনা করেন তিনি। এল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের পক্ষ থেকেও উঠেছে প্রশ্ন, গো-সুরক্ষার চেয়ে বেশী মুসলিমদের ভাবধারায় আঘাত করাই এই সরকারের লক্ষ্য তাই এই বিলের বিরোধীতা করে সংশোধন করাই একমাত্র কাজ হবে তাদের।