‘ফেসবুক’এ ইস্তফা দিয়েও শেষমেশ সংসদ পদে রয়েই গেলেন বাবুল
'যা বলেছি, তাই মিলে গেছে' কটাক্ষ কুনাল ঘোষের
শনিবারই ‘মনের দুঃখে বনে’ যাওয়ার মতো যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ফেসবুকে লম্বা পোস্ট করে বিজেপি, রাজনীতি, সাংসদ পদ সব কিছু ছেড়ে দিয়েছিলেন বিজেপির সাংসদ এবং সদ্য প্রাক্তন ‘কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী’ বাবুল সুপ্রিয়। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে গেছিলো বিস্তর জল্পনা আর রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুঁড়ি। বাবুল কি এবার তৃণমূলে? বিজেপির বাবুল কি এবার বিজেপিকেই নিশানা করে তির ছুঁড়বেন? এর মাঝেই দিলীপ ঘোষের ‘মাসির গোঁফ’ আর কুনাল ঘোষের ‘গায়কের অভিনয়’এর মতো মন্তব্য এবং তাতে বাবুলের পাল্টা ‘শ্রী ও শ্রীমান’ যুক্ত রিপ্লাই তাঁর বিজেপি ছাড়ায় কার্যত সিলমোহর দিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু বাবুলের সাংসদ পদ ত্যাগের স্বপ্নপুরন ‘আপাতত’ স্থগিত রইল। সোমবার বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডার সাথে বৈঠক করে তিনি জানালেন, সাংসদ পদ তিনি ছাড়ছেন না। যদিও পাশাপাশি এদিন তিনি জানান, তিনি তাঁর রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্তে এখনও অনড়। এবং অন্য কোনও দলে যোগ দেওয়ারও কোনও সম্ভবনা এখন তাঁর আর নেই।
তবে বাবুলদের এরম মন্তব্য সামনে আসতেই তাতে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কুনাল ঘোষ। তাঁর কথায়, তিনি যা বলেছেন তাই মিলে গেছে। বাবুল আসলে ইস্তফা দিতে চান না, ইস্তফা না দেওয়ার নাটক করছেন তিনি। এসব নাকি শুধুই তাঁর কথার ‘মারপ্যাঁচ’।
যদিও শনিবার বাবুলের এহেন মন্তব্যের পরেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নড়েচড়ে বসেছিল। সোমবার বাবুলকে ফোন করে কথা বলেন খোদ অমিত শাহ। তিনি বাবুলকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার অনুরোধ করেন বলেও সুত্রের খবর। তারপরেই জে পি নাড্ডার সাথে বাবুলের বৈঠক। গতকালও নাদ্দার সাথে টেলিফোনে কথা হয় সুপ্রিয়র। এদিন দীর্ঘক্ষণ দুজনে ভিডিও কনফারেন্সে বাক্য বিনিময় করেন। যার ফল বাবুলের ‘আপাতত’ সংসদ পদে থেকে যাওয়া।
রাজনীতিতে দলবদল আকছার ঘটে। কেউ ক্ষমতার লোভে নিজের দল ত্যাগ করে অন্য দলে যান। কেউ যান টাকার লোভে। কেউ বা সিবিআই-এর ‘ভয়ে’। আবার এমন নজিরও আছে যেখানে ক্ষমতাশালী দলের থেকে কেউ সরে গেছেন তুলনামুলক কম ক্ষমতাশালী দলে, বা বানিয়ে নিয়েছেন নিজের দল। এখন আপাতদৃষ্টিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপণে বাবুলের রাজনৈতিক বর্তমান স্থির লাগলেও একমাত্র সময়ই বলতে পারবে তাঁর রাজনীতির ভবিষ্যৎ।