তালিবানি দাপটে কাঁপছে আফগানিস্তান (Afghanistan)। তালিবানি শাসনের নয়া অধ্যায় শুরু হতেই, দেশ ছাড়ার হিড়িক। যে কোনও মূল্যে দেশ ছাড়ার চেষ্টায় প্রত্যেকে। ইতিমধ্যেই কাবুল বিমানবন্দরে উপছে পড়া ভিড়। রীতিমতো ঠাসাঠাসি করে বিমানে উঠছে মানুষ। প্রসঙ্গত, রবিবার দুপুর থেকে কাবুলে তালিবান ঢুকতেই ভিড় জমতে শুরু করে আফগানিস্তানের রাজধানীর বিমান বন্দরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সোমবার বিমানবন্দর চত্বরে গুলিও ছোড়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আমেরিকার সেনা। তবে তাতে লাভ মেলেনি।
বিমানের ভিতর জায়গা না পেতেই স্রেফ তালিবানি শাসন থেকে রেহাই পেতে প্রাণ হাতে নিয়ে কেউ উঠে পড়ছেন বিমানের ইঞ্জিনে। এত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে বিমান ওড়া আদৌ সম্ভব হবে কি না, তা না ভেবেই বিমানে চড়েছিলেন বহু মানুষ। যার পরিণতি হল মর্মান্তিক। উড়ন্ত বিমান থেকে পড়ে মৃত্যু হল ২ জনের। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেই মুহূর্তের ভিডিও। মর্মান্তিক ওই ঘটনার ভিডিও দেখে শিউড়ে উঠছেন প্রত্যেকে।
এই পরিস্থিতিতে সোমবার দুপুরে সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কাবুলের উড়ানপথ। যার জেরে আফগানিস্তানের রাজধানী শহরে আটকে থাকা ভারতীয়দের কী ভাবে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, মঙ্গলবারই তালিবান নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করতে পারেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত। পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে সোমবারই ইসলামাবাদে পৌঁছে গিয়েছে তালিবানের একটি প্রতিনিধি দল। এই দিনেই চলতি সপ্তাহে দ্বিতীয় বার আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের সভাপতিত্বে বৈঠকে বসতে চলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।
তবে এবার ভারতকে অবস্থান বদলের পরামর্শ দিলেন তালিবানি মুখপাত্র। ভারতকে তালিবান জানিয়ে দিয়েছিল, "সেনা পাঠালে ফল ভাল হবে না!", তবে কাবুল জয়ের পরে ভারতকে ভিন্ন সুরে বার্তা দিল তালিবান। তালিবান মুখপাত্র মহম্মদ শাহিন সুহেল (Mohammad Suhail Shaheen) পরিষ্কার করে ভারতের উদ্দেশ্যে জানিয়েছেন, "আশরফ ঘানি সরকারের সঙ্গে ভারতের যে বন্ধুত্ব ছিল, তালিবানের সঙ্গেও তেমন সম্পর্ক বজায় রাখলে ভারত আফগানিস্তান দু'দেশের পক্ষেই তা মঙ্গলজনক হবে।"
প্রসঙ্গত, তালিবান যোদ্ধারা রবিবার কাবুলের দখল নেওয়ার পরেই দেশ ছেড়েছেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি। তবে তিনি কোন দেশে গিয়েছেন তা এখনও স্পষ্ট না হলেও, তাঁর উপর ক্ষুব্ধ আফগানরা। শুধু জনতা নয়, রাজনৈতিক নেতারাও গনির এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন।