সাড়া জাগানো সাফল্য এল এইচআইভি ভ্যাকসিনের প্রথম ট্রায়ালে। আইএভিআই ও স্ক্রিপস রিসার্চ-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের ৯৭ শতাংশের মধ্যেই দেখা গেছে, প্রয়োজনীয় অনাক্রমী কোষগুলিকে শনাক্ত করে এইচআইভি ও অন্যান্য ভাইরাসঘটিত সংক্রমণের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম এই এইচআইভি ভ্যাকসিন।
কীভাবে কার্যকর এই ভ্যাকসিন? দেখা গেছে জার্মলাইন টার্গেটিং পদ্ধতিতে সাধারণ বি-কোষগুলিকে সক্রিয় করে এবং এর ফলেই বিভিন্ন প্রকারের ব্যপকভাবে নিরপেক্ষ অ্যান্টিবডি(bnAbs) গঠন হয়। স্ক্রিপস রিসার্চ প্রফেসর ইমিউনোলজিস্ট তথা আইএভিআই-এর ভ্যাকসিন ডিজাইনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. উইলিয়াম স্কিফের মতে, bnAbs গঠনের জন্য বি-কোষগুলিকে সক্রিয় করা আগে প্রয়োজন কারণ এই বি-কোষগুলিই বিশেষ কার্যক্ষমতার দ্বারা bnAb secreting কোষ গঠন করতে পারে। এক মিলিয়ন বি-কোষের মধ্যে মাত্র একটি বি-কোশকেই টার্গেট করে পরীক্ষা করা হয় এবং এই প্রথম দফা মানবদেহে ট্রায়ালের থেকে অত্যন্ত ধনাত্মক একটি ফলাফল পাওয়া গেছে।
প্রথম দফার এই হিউম্যান ট্রায়ালে আটচল্লিশ জন শারীরিকভাবে সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এই পরীক্ষায় অংশ নেন। আইএভিআই এর G001 ট্রায়ালে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের eOD-GT8 60mer ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হয়। গত ৩রা ফেব্রুয়ারি এর ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয় স্কিফ আয়োজিত আন্তর্জাতিক এইডস সোসাইটি এইচআইভি রিসার্চ ফর প্রিভেনশন-এর ভার্চুয়াল কনফারেন্সে।
আমরা সকলেই কমবেশি জানি, আজ বিশ্বজুড়ে ৩৮ মিলিয়ন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত এবং নিরাময়ের জন্য কোনোপ্রকার টিকা আজও অনাবিষ্কৃত। অতি দ্রুততা ও সক্রিয়তার সাথে এই এইচআইভি ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে সমস্ত রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বিনষ্ট করে। ফ্রেড হাচ'স ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইনফেকশস ডিজিস ডিভিশন-এর ডিরেক্টর তথা প্রাক্তন ভাইস-প্রেসিডেন্ট ড. জুলি ম্যাকলার্থের মতে, এইচআইভি ভ্যাকসিনের আবিষ্কারের পথে এটাই একটা দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ ছিল এবং প্রথম ট্রায়ালে অ্যান্টিবডি গঠন করতে পারা একটা বড়ো সাফল্য। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে তৈরি করা ভ্যকসিন শুধুই এইচআইভি নয়, অন্যান্য প্যাথোজেনের ক্ষেত্রেও কার্যকরী হবে, জানান ড.স্কিফ।
পরবর্তী দফার ট্রায়ালগুলি সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পরবর্তী ধাপে মডার্ণা বায়োটেকনোলজি কোম্পানির সহায়তায় mRNA-ভিত্তিক ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলবে। এইচআইভি ভ্যাকসিনের অতি সক্রিয়তা বাড়াতে mRNA টেকনোলজি ব্যবহার অনিবার্য যা করোনা ভ্যাকসিন তৈরিতেও সহায় হয়েছে, দাবি বিশেষজ্ঞদের।