খেলায় হার-জিত থাকে। আর তার সাথে সাথে আবেগ। তবে কখনও কখনও আবেগ এমনই মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায়, যখন মানুষ ঘৃণ্যতম কাজ করার আগে বা কথা বোলার আগে একবারের জন্যও ভাবে না। টি-২০ বিশ্বকাপে দেখা গেছিল ঠিক তেমনই চিত্র। হারের পর ভারতের প্রাক্তন টি-২০ অধিনায়ক বিরাট কোহলির ৯ মাসের শিশুকন্যা ভামিকাকে দেওয়া হয়েছিল ধর্ষণের মতো জঘন্যতম হুমকি! তবে হুমকি প্রদানকারীকে হায়দ্রাবাদ থেকে গ্রেফতার করেছে মুম্বাই পুলিশ। সূত্রের খবর, ধৃতের নাম রামনাগেশ আলিবাথিনি। বয়স ২৩। পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। আগে একটি খাবার ডেলিভারি অ্যাপ সংস্থাতেও সে কাজ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বর্তমানে তাকে হায়দ্রাবাদ থেকে মুম্বাই নিয়ে আসা হচ্ছে, এমনটাই খবর পাওয়া গেছে মুম্বাই পুলিশ মারফত।
ঘটনার সূত্রপাত টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ অর্থাৎ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। সেই ম্যাচে অভাবনীয় পরাজয়ের পরেই ধর্মবিদ্বেষমূলক মন্তব্য উড়ে আসতে থাকে মহম্মদ শামিকে উদ্দেশ্য করে। তবে এই ঘটনায় সতীর্থের পাশে দাঁড়ান কোহলি। নিউজিল্যান্ড ম্যাচের আগে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার কাছে ধর্ম নিয়ে কাউকে আক্রমণ করা সবচেয়ে নৃশংস কাজ। কোনও পরিস্থিতি নিয়ে সবারই ব্যক্তিগত মতামত থাকতে পারে। আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনোদিন কারোর সঙ্গে ধর্ম নিয়ে বিভেদ করার কথা ভাবতে পারিনি। কারন প্রত্যেক মানুষের কাছে এটি খুব পবিত্র এবং ব্যক্তিগত বিষয়’।
আর এই মন্তব্যের জেরে আক্রান্ত হতে হয়েছিল তৎকালীন অধিনায়ক কোহলির শিশুকন্যাকে। সোশ্যাল মিডিয়া টুইটারে সর্বসমক্ষে একরত্তি শিশুকন্যাকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া হয় ধর্ষণের হুমকি। যদিও টুইটারের তরফ থেকে সেই হ্যান্ডেলটি ডিলিট করে দেওয়া হয়। অবশেষে গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ঘৃণ্য এই টুইটকে কেন্দ্র বেশ কিছুদিন তোলপাড় হয় সমস্ত সামাজিক মাধ্যম। সাধারন নাগরিক থেকে বিশিষ্টবর্গ, সকলেই দাঁড়ান কোহলির পাশেই। এমনকি ইনজামাম-উল-হকের মতো পাকিস্তানি খেলোয়াড়দেরও বিরাটের পক্ষ নিয়ে সুর চড়াতে দেখা যায়। সে সময় পাকিস্তানি কিংবদন্তী এই ক্রিকেটার বলেন, ‘আমরা হয়ত আলাদা দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছি। তবে খেলছি তো একটাই খেলা। কোহলির নেতৃত্ব বা ওঁর ব্যাটিং নিয়ে সমালোচনা করুন, কিন্তু ওঁর পরিবারকে আক্রমণ করার অধিকার পেলেন কথা থেকে?’