গত কয়েক দিনে শহর কলকাতায় (Kolkata) কোভিড (Covid-19) সংক্রমণ ফের ঊর্ধ্বমুখী। তারপরও সাধারণ মানুষের মাস্ক না ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। এর পাশাপাশি কলকাতার বেশ কয়েকটি স্থানে চলছে পুজোর বাজার কিংবা সাধারণ মানুষের ঘরের বাইরে বেরোনোর প্রবণতা। তার জেরে নিউ মার্কেট, হাতিবাগান, শ্যামবাজার, কলেজস্ট্রিট প্রভৃতি অঞ্চলে মাস্কহীন লোকজনের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। এবার কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipality) এবং কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) যৌথ উদ্যোগে করোনার তৃতীয় ঢেউ রুখতে এক অভিনব পন্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। এবার থেকে মাস্ক না পরে বেরোলে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেবে কলকাতা পুলিশ। মাস্কহীন ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে। একশো টাকার বিনিময়ে মিলতে পারে জামিন।
এই নির্দেশের পরই শহর কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ধড়পাকড় শুরু হয়েছে। এদিন নিউ মার্কেট চত্বর থেকে মাস্ক না পরার অভিযোগে এক যুবককে ভ্যানে তুলে নিউ মার্কেট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তিনি নাকি একশো টাকার বিনিময়ে জামিন পেয়েছেন। এদিন কলকাতা পুলিশ এলাকায় এলাকায় সচেতনতার প্রচার শুরু করেছে। সমস্ত থানাকে পুরসভার কর্তৃপক্ষদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। এদিন পুর ভবনের বিশেষ বৈঠকের পর এমন সিদ্ধান্তের কথা জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক দিনে গোটা দেশে হু হু করে বাড়ছে নতুন কোভিড সংক্রমণ। দেশের মোট আক্রান্তের দুই-তৃতীয়াংশ কেরলে। এর সঙ্গে ওনাম উৎসবের সম্পর্ক থাকলেও থাকতে পারে, বলছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এবার আর কয়েক দিন পর বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। যা নিয়ে বাঙালির ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এই উৎসবই যাতে নতুন কোন আশঙ্কার কারণ না হয়ে ওঠে, সেদিকে নজর রেখেই পুরসভা এবং কলকাতা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে এমন ব্যবস্থা বলে জানা গেছে। এদিন পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘শহরের পথেঘাটে এখন প্রচুর মানুষ মাস্ক ছাড়াই ঘুরছেন। এই প্রবণতা বাজারগুলিতে বেশি করে চোখে পড়ছে। যিনি মাস্ক ছাড়া ব্যবসা করবেন, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা তো নেওয়া হবেই। পাশাপাশি বিক্রেতাদের দায়িত্ব থাকবে ক্রেতাদের মাস্ক পরতে বাধ্য করা। না হলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।’’ ফিরহাদ হাকিম আরও জানিয়েছেন, এ বার থেকে নিয়মিত বাজার জীবাণুমুক্ত করার কাজও শুরু করবে পুরসভা।
এখানেই শেষ নয়, যেকোন সরকারি পরিষেবা পেতে হলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। 'দুয়ারে সরকার' প্রকল্পের সুবিধা পেতে হলে মাস্ক পরার কথা বলা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, মাস্ক না পরলে দুয়ারে সরকারের লাইনে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। করোনার পাশাপাশি প্রবল বৃষ্টিতে শহরে বেড়েছে ডেঙ্গি প্রবণতা। ডেঙ্গি সচেতনতায় প্রতি ওয়ার্ডে অটোয় প্রচার শুরু হবে। পাশাপাশি মাস্ক পরা, বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখার বিষয়ে পুরসভার তরফে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পুজোর মরশুমে মানুষের বেলাগাম কর্মকান্ডে যাতে নতুন করে করোনার সংক্রমণ না বাড়ে, সেদিকে নজর থাকবে পুরসভার।