সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমের 'হট টপিক' নুসরত জাহান রুহি (Nusrat Jahan)। তিনি নাকি মা হতে চলেছেন! মা হওয়া তো গর্বের বিষয়। কিন্তু বাধ সেধেছে 'বাবা' কে? এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে জল্পনার শেষ নেই। এর মধ্যে আবার নুসরতের স্বামী নিখিল জৈন (Nikhil Jain) জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। গত কয়েক মাস নুসরতের সঙ্গে তাঁর কোন সম্পর্ক নেই।
এদিকে অভিনেতা যশ দাশগুপ্তের সঙ্গে গত কয়েক মাস নুসরতের সখ্য সামাজিক মাধ্যমে গোপন থাকেনি। 'এসওএস কলকাতা' ছবির শুটিংয়ের সময় থেকে দুজনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা টলিপাড়ায় গুঞ্জন ছিল। এমনকী দুজনে একসঙ্গে জয়পুরে চুপিচুপি ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন। আজমীরের দরগায় নুসরত ও যশের ছবি ভাইরাল হয়। নুসরতের এই মাতৃত্বের খবর সংবাদ মাধ্যমে চাউর হতেই সবার আগে মানুষের প্রশ্ন এই সন্তানের বাবা কে? এ নিয়ে নুসরত কিংবা অভিনেতা যশ কেউ-ই মুখ খোলেননি। বরং অভিনেত্রী নুসরত ইন্সট্রা স্টোরিতে বারবার দিয়েছেন ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট।
এবার নুসরতের এই বিষয় নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সবাক হতে দেখা গেল লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, নুসরতের মা হওয়ার খবর তিনি জেনেছেন। পাশাপাশি তিনি উল্লেখ করেছেন মানুষের অনুমান নিখিল নুসরতের মাঝে যশের উপস্থিতির কথা। সম্পর্ক ভালো জায়গায় না থাকলে বিবাহ বিচ্ছেদের পক্ষপাতী লেখিকা। লেখিকার কথায়, "খবরটি খবর না গুজব জানিনা। তবে এই যদি পরিস্থিতি হয়, তবে নিখিল আর নুসরতের ডিভোর্স হয়ে যাওয়াই কি ভালো নয়? অচল কোনও সম্পর্ক বাদুড়ের মতো ঝুলিয়ে রাখার কোনও মানে হয় না। এতে দু'পক্ষেরই অস্বস্তি।"
লেখিকা তসলিমা নাসরিন বিতর্কের আর এক নাম মনে করেন একাংশ। বারবার ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে তাঁর লেখনি গর্জে উঠেছে। হাতিয়ার নয়, কলমই তাঁর হাতিয়ার। নুসরত নিখিল দুই ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের বিবাহে 'বেশ আনন্দ' পেয়েছিলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে লেখিকা নিজেই বলেছেন, "অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করি বলে দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে বিয়ে হলে খুব স্বাভাবিক কারণেই পুলকিত হই। জাত ধর্ম ইত্যাদি দূর করতে হলে ভিন্ন জাত আর ভিন্ন ধর্মের মানুষকে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। এতেই হিংসে আর হানাহানিকে হটানো যাবে। কিন্তু এত চোখ জুড়োনো জুটি যে বেশিদিন সুখে থাকবে না কে জানতো!"
বর্তমান সমাজ নারী স্বাধীনতার কথা বলে। অথচ সন্তানকে বড় হতে হয় পিতৃ পরিচয়ে। মায়ের পরিচয় সেখানে গৌণ। তবে আজকাল 'সিঙ্গেল মাদার' হয়েছেন অনেকেই। মূলত স্বাবলম্বী মেয়েরাই তা সফল করতে পেরেছেন। কিন্তু সমাজের 'লাল' চোখকে আটকানোর উপায় কী? প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনদের একাংশ। লেখিকা তসলিমা নাসরিন তাই বলেছেন, "নিশ্চয়ই মেয়েটি স্বনির্ভর। আসলে স্বনির্ভর এবং সচেতন হলে, আত্মবিশ্বাস এবং আত্মসম্মান যথেষ্ট থাকলে নিজের সন্তানের অভিভাবক নিজেই হওয়া যায়। নিজের সন্তানকে নিজের পরিচয়েই বড় করা যায়।" নুসরত যশের সম্পর্কের মাঝে এসেছেন অভিনেতা যশ দাশগুপ্ত। সংবাদ মাধ্যমে গুজব নিখিলের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে যশকেই বিয়ে করতে পারেন নুসরত। এরপরই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন লেখিকা। তিনি বলেছেন, "এক জনকে ত্যাগ করে আরেক জনকে বিয়ে করলে খুব যে সুখময় হয়ে ওঠে জীবন তা তো নয়। দ্বিতীয় বিষময় জীবন থেকে বাঁচতে তাহলে কি আবার আরেকটি বিয়ে করতে হবে? তাহলে এ রেসের শেষ হবে না, কাংক্ষিত পুরুষের দেখাও মিলবে না। স্বাধীনচেতা নারীর কাংক্ষিত পুরুষ কল্পনায় থাকে, বাস্তবে নয়।"