শোভন-বৈশাখী জুটি কোনও সিরিয়ালের গল্পের থেকে কম কিছু নয়। পুরনো সম্পর্কের ‘টানাপোড়েন’, ‘প্রথম পক্ষ’ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক ‘ট্রল’ বা তির্যক মন্তব্যের অগ্নিবাণ, সবকিছুই রয়েছে বাংলার এই ‘রোমিও-জুলিয়েটের’ উপাখ্যানে। তবে এতদিনেও কোথাও না কোথাও রয়ে গেছিল তাঁদের সম্পর্কে ‘বৈধতার’ কাঁটা। ভরপুর ভালোবাসা থাকলেও কোথাও যেন রয়ে গেছিল ‘স্বীকৃতির’ অভাব। তবে সেই অভাবও মেটালেন শোভন। দশমীতে যখন বাংলার মেয়ে-বউরা চোখের জলে বিদায় জানাচ্ছেন ঘরের মেয়ে উমাকে, তখনই সেই উমার মৃন্ময়ী মূর্তির সামনেই বৈশাখীর সিঁথিতে সিঁদুর তুলে দিলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র।
আর শোভনের হাত থেকে সিঁথিতে সিঁদুর তুলে নেওয়ার পরেই বৈশাখীর মন্তব্য, ‘স্বীকৃতির অভাব আসলে সমাজের। সমাজ এটাও দেখছে, আমাদের মধ্যে সততার অভাব নেই। আমরা দুটো প্রাণহীন সম্পর্ককে টেনে না নিয়ে গিয়ে আমরা সেটাকে শেষ করে আমাদের যেখানে আনন্দ, যেখানে শান্তি সেটাকে খুঁজে নিয়েছি। হয়ত এটা দর্শকদের কাছে নতুন অনুভুতি। কিন্তু আমার মনে হয় আমরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করি, আপনারা স্বাভাবিক আঙ্গিকে দেখলে ভালো লাগবে’।
যদিও এর মাঝেও সম্পর্কের ত্রুটি ধরতে উঠে পড়ে লেগেছেন একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া ইউজার। তাঁদের কথায়, শোভনবাবু বৈশাখীদেবীর সিঁথিতে সিঁদুর তো পরালেন, তবে আইনত কিন্তু তাঁরা এখনও পর্যন্ত অন্যের সাথে সম্পর্কে রয়েছেন। দুজনেরই প্রথম পক্ষের স্বামী বা স্ত্রীর সাথে কিন্তু এখনও পর্যন্ত আইনি বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি। তাই এই ঘটনাকেও কেন্দ্র করে আবারও উঠে এসেছে ‘বৈধতার’ প্রশ্ন।
তবে এতদিনের মতো এবারেও এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে নারাজ শোভন-বৈশাখী জুটি। তাঁরা রয়েছেন ‘মম চিত্তে’ই। সমাজ যাই বলুক, এনারা চলছেন নিজেদের ছন্দে, নিজেদের তালে, নিজেদের লয়ে। সমাজের ট্যাবু যে তাঁদের আত্মিক সম্পর্কে এতটুকুও চিড় ধরাতে পারেনি তা বারবার প্রমান করে চলেছেন এই দুজনে। একসাথে হাত ধরে ঘোরা, শপিংয়ে যাওয়া বা ম্যাচিং করে শাড়ি-পাঞ্জাবি পরা, সবেতেই তাঁরা বিগত কয়েকবছর ধরে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন। তাঁদের কেন্দ্র করে এতো ট্রল, এতো মিমের বন্যা, তাও তাঁরা অবিচলিত! আর সেখানেই জয় ভালবাসার। তাই তো ট্রল, মিম, কটূক্তি, সমাজের চোখরাঙানির মাঝেও এখনও বৈশাখীর ‘চোখে তো সকলি শোভন’।