কলকাতার বড়বাজারের ব্যবসায়ী সব্যসাচী মন্ডলের খুন মামলার তদন্ত করতে নেমে পুলিশ প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে রিকিকে গ্রেপ্তার করেছিল। এবার আজ অর্থাৎ সোমবার পুলিশ রিকিকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনঃনির্মাণ করে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশের সামনে কার্যত ভেঙে পড়েন অভিযুক্ত রিকি এবং সমস্ত ঘটনা সবিস্তারে জানান। তিনি জানিয়েছেন, "দেরিয়াপুরের গ্রামের বাড়িতে সব্যসাচী মন্ডলকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী খুন করা হয়। প্রথমেই তারা ঠাকুরদালানের কাছে এসে ছুরি দেখিয়ে গাড়ির ড্রাইভার আনন্দ সাউকে ভয় দেখান। তারপর তাঁর মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে বাধ্য করেন সব্যসাচী মণ্ডলকে ডাকার জন্য। তারপর দোতলা থেকে নামার আগেই দুষ্কৃতীরা তৈরি হয়ে থাকেন এবং তিনি নেমে এলেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় রিকি। এক রাউন্ড গুলি চালানোর পর রিকির দলবল সব্যসাচীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারবার কুপিয়ে খুন করে।"
এছাড়াও দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে রিকির কাছ থেকে। সেই সমস্ত তথ্য সূত্র ধরে বর্তমানে পুলিশ সব্যসাচীর খুড়তুতো ভাই সোমনাথ মন্ডলের খোঁজ করে সমস্ত জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে। তবে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান যে সোমনাথ এবং তার পরিবার ইতিমধ্যেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। তারা মোবাইল বন্ধ করে রেখেছেন। মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার না করে ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখার জন্য তাদের হদিশ পেতে সমস্যা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পুলিশ ঘটনার দিন সোমনাথের সাথে দেরিয়াপুকুরে আসা তার বন্ধুর বয়ান নথিভূক্ত করেছে। এছাড়া টানা জেরা চলছে সোমনাথের দোকানে কর্মরত কর্মীদের।
অন্যদিকে দোষ স্বীকার করে নেওয়ার পরও রিকির হাতের একটি চোট নিয়ে ফরেনসিক পরীক্ষার আবেদন জানিয়েছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে ঘটনার সময় একটি গুলি রিকির হাত স্পর্শ করে গিয়েছিল। আর তাতেই হাতের ক্ষত হয়। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া রক্তের নমুনার সাথে রিকির নমুনা মিলিয়ে দেখতে চায়। তাই তদন্তকারী অফিসার এর আবেদন মঞ্জুর করে সিজেএম বর্ধমান মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক স্টেট মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধানকে এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।