টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন কলকাতা। তবে শুধুমাত্র তিলোত্তমা নয়, জল জমে রয়েছে শহরতলির বহু পুরসভা ও জেলাগুলিতে। রাজ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছেন বিপর্যয় মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা। তবে কাজ করতে গিয়ে কর্মীদের নজরে এসেছে, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ব্যাগের যথেচ্ছ অপব্যবহারের চিহ্ন। কর্মীদের দাবি, সরকারের অবহেলা নয় বরং হাজার হাজার ব্যবহৃও প্লাস্টিকের ব্যাগ, পানীয়ের বোতল, থার্মোকল ইত্যাদি জল-কাদার সঙ্গে মিশে কুন্ডলী পাকিয়ে রয়েছে। এর ফলে নিকাশি নালার মুখ আটকে আছে। স্বাভাবিকভাবেই, বৃষ্টির জল আটকে যাচ্ছে।
কলকাতা পুরসভার ডিসিল্টিং মেশিন ভূগর্ভস্থ নিকাশি থেকে যে হাজার হাজার টন কাদামাটি ও ময়লা তুলছে, তারও একটা বড় অংশই হল প্লাস্টিকের ব্যাগ ও বর্জ্য।
এমন তথ্য সরকারের কাছে পৌঁছানো মাত্র কলকাতার পাশাপাশি রাজ্যের সমস্ত পুরসভাতেই ৭৫ মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার বন্ধে একগুচ্ছ নির্দেশনামা পাঠিয়েছে নবান্ন। রাজ্য সরকারের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরই শেষ হচ্ছে ৭৫ মাইক্রনের কম প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার।
পরিবেশ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য স্বপন সমাদ্দার জানিয়েছেন, "নিকাশি বন্ধে প্লাস্টিক ব্যাগ সত্যিই বড় শত্রু হয়ে উঠেছে। কিন্তু করোনা কালের পর সবে পুজোর বাজার শুরু হয়েছে। গরিব হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা প্লাস্টিক ব্যাগ দিয়েই কেনাবেচা করছেন। তাই সতর্ক করলেও এক্ষুনি ৭৫ মাইক্রনের কম পুরু প্লাস্টিক ব্যাগ বন্ধ করতে বলতে পারব না।"
যদিও পুরমন্ত্রীর দাবি, "প্লাস্টিক শুধু নয়, ব্যাপকহারে থার্মোকলও নিকাশি বন্ধ করে দিয়ে জলমগ্ন পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। রাজ্যের প্রতিটি পুরসভাকে তাই বিষয়টি নিয়ে নাগরিক সচেতনতা কর্মসূচি নিতে যেমন বলা হচ্ছে, তেমনই আইনি কড়াকড়ি চালুর প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।"
প্রসঙ্গত, এর আগে কেন্দ্র থেকে ৫০ মাইক্রনের নিচে প্লাস্টিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। তা আবার বাড়িয়ে ৭৫ মাইক্রন করল কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।