মাথার উপরে ছিল অনেক ঋণের বোঝা। তার সঙ্গে ক্রমাগত পাওনাদারদের চাপ বাড়ছিল ধীরে ধীরে। এই অবস্থায় বাধ্য হয়ে সম্প্রতি ঠাকুরের গয়না বিক্রি করে ঋণের বোঝা কমানোর চেষ্টা করেছিলেন এক ব্যক্তি। কিন্তু, ৫২ বছরের দেবীপ্রসাদ আইচ দেবীর গয়না বিক্রি করে কখনোই ঋণের বোঝা মেটাতে পারেননি। আসলে মন থেকে তিনি গয়না বিক্রির বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। এই কারণেই অবশেষে মহা পঞ্চমীর দিন কলকাতার বাড়িতে আত্মঘাতী হলেন ওই প্রৌঢ়। পুলিশ সূত্রে খবর, দক্ষিণ কলকাতার গলফগ্রীন এলাকার বিজয়গড়ে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। ওই এলাকায় একটি গ্রিলের কারখানা চালাতেন দেবীপ্রসাদ আইচ।
কিন্তু লকডাউনের পর থেকে তার অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। বাজারে বিশাল দেনা পড়ে রয়েছে। পাওনাদাররা ক্রমাগত তার উপরে চাপ দিতে শুরু করেছিল। এমনকি তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলেও খবর। এরকম অবস্থায় পাওনাদারদের চাপ সহ্য করতে না পেরে কিছুদিন আগে তিনি বাড়ির ঠাকুর ঘরে গিয়ে প্রতিমার গয়না খুলে নেন। সেই গয়না বিক্রি করে পাওনাদারদের একটি টাকার অংশ শোধ করেছিলেন তিনি। কিন্তু তারপর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন ওই ব্যক্তি। পরিবারের লোকেদের সঙ্গে ভালো করে কথা হতো না তার। পরিবারের মানুষজন দাবি করছেন, একেতো পাওনাদাররা চাপ দিচ্ছেন, অন্যদিকে আবার দেবীপ্রসাদ ঠাকুরের গয়না বিক্রি করার বিষয়টি মেনে নিতে পারছিলেন না।
অবশেষে রবিবার মহা পঞ্চমীর দিন আত্মঘাতী হলেন দেবীপ্রসাদ আইচ। রবিবার অর্থাৎ মহা পঞ্চমীর দিন দীর্ঘক্ষন তার সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না বলে জানিয়েছেন পরিবারের। ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। অবশেষে ঘরের দরজা ভেঙে তারা ভেতরে ঢুকে দেখেন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন দেবপ্রসাদ আইচ। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার ময়নাতদন্ত করা হবে কিন্তু যতটা দেখে মনে হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।