একুশের নির্বাচন দোরগোড়ায় চলে এসেছে। তারই মধ্যে আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বাজেট অধিবেশন করেছে। নির্বাচনের আগে বাজেট অধিবেশন যে জনহিতকর হবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ ছিল না। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবারের বাজেটে যেন ছিল পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জন্য কল্পতরু। আজকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অনুপস্থিতিতে যেমনভাবে বাজেট পেশ করেছেন তাতে বাংলার মানুষের সমস্ত প্রত্যাশা একাধারে পূরণ করে দিয়েছেন তিনি। আজকের ওই প্রতিবেদনে রাজ্যের বাজেটের কিছু চমকপ্রদ তথ্য সম্বন্ধে সবিস্তারে জেনে নিন।
আজকের বাজেটের মূলত আগামী চার মাসের ভোট অন অ্যাকাউন্ট নিয়ে আলোচনা করার থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কথা শোনালেন। তিনি জানিয়েছেন গত অর্থবছরের তুলনায় রাজ্যের জিডিপি ২.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজস্ব আদায় বেড়েছে ২.৯ শতাংশ। আজ মুখ্যমন্ত্রী একাধিক ক্ষেত্রে বড় বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেছেন। তাদের মধ্যে কিছু অন্যতম হল:
১) ভোট প্রাক্কালে তপশিলি জাতি ও উপজাতির জন্য তিনি ২০ হাজার পাকা বাড়ি করার জন্য দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। এছাড়াও তাদের জন্য ১০০ টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ও হিন্দি, উর্দু ভাষায় ১০০ টি স্কুল বানানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। রাজবংশী ভাষাতেও হবে ১০০ স্কুল। সেই সাথে দেড় হাজার প্যারাটিচার নিয়োগ হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
২) তিনি কেন্দ্র সরকারকে দ্রুত কিষান সম্মান নিধি প্রকল্প চালু করার অনুরোধ জানিয়েছেন। সেই সাথে তিনি কৃষক বন্ধু প্রকল্পের কৃষকদের বার্ষিক ভাতা এক হাজার টাকা বাড়িয়ে ৬০০০ টাকা করেছেন।
৩) চা সুন্দরী প্রকল্পে ৩ লাখ শ্রমিককে পাকা বাড়ি দেওয়ার ঘোষণা করেছেন তিনি।
৪) মা কিচেন এর মাধ্যমে রাজ্যজুড়ে স্বল্পমূল্যের খাবার ও জুন মাসের পর থেকে বিনামূল্যে রেশন বিলি করার ঘোষণা করেছেন তিনি।
৫) বছরে দুবার দুয়ারে সরকার ও পাড়ায় পাড়ায় সমাধান প্রকল্প হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বছরের যেকোনো সময় এই কার্ড করা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এছাড়াও ৩ বছর পরে কার্ড নবীকরণ করা যাবে।
৬) পার্শ্বশিক্ষকদের বছরের ৩ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি পাবে ও অবসরের সময় এককালীন ৩ লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এছাড়াও প্রতিবছর দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়ারা ট্যাব পাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
৭) ৬০ বছরের বেশি বয়সের নাগরিকদের জন্য বার্ধক্য ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করেছেন তিনি। যুবশক্তি প্রকল্পে কম বয়স্ক ১০ হাজার পড়ুয়াকে প্রতিবছর ইন্টার্নশিপ দেয়া হবে বলে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর।
৮) রাজ্যজুড়ে ৪৬ হাজার কিলোমিটার রাস্তা করা হবে এবং জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সমস্ত যাত্রী পরিবহনের যানবাহনের রোড ট্যাক্স মুকুব করা হবে।
৯) সরকারি অনুমোদন প্রাপ্ত মাদ্রাসাগুলিকে ৫০ কোটি টাকার অর্থ সাহায্য করা হবে।
১০) দরিদ্র মাঝিদের মাসিক ১ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে।