নন্দীগ্রামের ফলাফল নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা জীবিত, মমতা সেখানে জিতুন বা না জিতুন, আগামী ৫ বছরের জন্য বাংলা নিজের মেয়ের কাছেই থাকতে চলেছে। অন্যদিকে আবার করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ, তাই শপথ গ্রহণ করতে হবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। যেমন ভাবা ঠিক তেমনই কাজ, ফল ঘোষণার ঠিক পরের দিনই তৃণমূল ভবনে নবনির্বাচিত বিধায়কের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো আগামী বুধবার অর্থাৎ ৫ তারিখ পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বসম্মতিতে মমতাকে পরিষদীয় দলনেত্রী হিসেবে নির্বাচন করেছেন নবনির্বাচিত সমস্ত বিধায়কেরা।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘোষণা করে জানালেন, "আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি, শারীরিক সমস্যা নিয়েও যেভাবে হুইল চেয়ারে বসে বাংলা এবং ভারতের মানুষকে রক্ষা করার জন্য সংগ্রাম তিনি করেছেন তার জন্য আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। আগামী ৫ মে শপথ গ্রহণ করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৬ তারিখ নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শপথ পাঠ করাবেন বর্তমান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরা পরবর্তীতে তাকে অধ্যক্ষ হিসেবে চাইছি।" সুব্রত মুখোপাধ্যায় বললেন, "নন্দীগ্রামের গণনা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। আমরা কোর্টের দ্বারস্থ হব, বিষয়টি এখনো পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনে ঝুলে রয়েছে। যদি শেষ পর্যন্ত নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীকে জয়ী বলে ঘোষণা করা হয়, তাহলেও সংবিধান অনুযায়ী আগামী ৬ মাসের মধ্যে জিতে আবার ফিরে আসতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।" প্রসঙ্গত, ২০১১ সালেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক এই ভাবেই মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।
অন্যদিকে আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বিপুল জয় নিয়ে উচ্ছ্বসিত তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া বাংলার রাজনীতির এভারগ্রীন জুটি শোভন-বৈশাখী। বিজেপি টিকিট না দেওয়ায়, ক্ষোভে-অপমানে তারা দুজনেই দলত্যাগ করেছিলেন। তারপর থেকেই রাজনীতির অঙ্গনে দুজনকেই দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়লাভের পর বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় শোনা গেল অন্য সুর। মমতাকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন বৈশাখী। বললেন, তার কাছে উনি নিজে কৃতজ্ঞ। তার পাশাপাশি মমতাকে সুশাসক হিসেবে ব্যাখ্যা করলেন শোভন-বান্ধবী। এখন রাজনৈতিক মহলে এটাই প্রশ্ন, আবারো কি পুরনো ময়দানে ব্যাক করতে চলেছেন শোভন-বৈশাখী? দলবদলুদের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফিরে আসার বার্তা কিছুটা এরকম ইঙ্গিত দিচ্ছে বটে। তবে শোভনের কাছ থেকে এখনো পর্যন্ত সরাসরি কোনো মন্তব্য শোনা যায়নি।