গত মাস থেকেই গোটা বঙ্গ রাজনীতিকে উত্তাল রয়েছে কসবার ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ড নিয়ে। নকল আইএস অফিসার দেবাঞ্জন দেবের (Debanjan Deb) কান্ড-কারখানা দেখে চক্ষু চড়কগাছ সকলের। এই পরিস্থিতিতে তদন্তকারী গোয়েন্দাদের টিম লালবাজারের "সিট" (SIT) সক্রিয়ভাবে ঘটনা তদন্তের কাজে নেমে পড়েছে। জানা গিয়েছে, দেবাঞ্জন কান্ডের তদন্তে নেমে গোয়েন্দা দল এবার কলকাতা পুরসভাকে (Kolkata Municipal Corporation) ৫ দফা প্রশ্ন পাঠিয়ে দ্রুত জবাব চেয়েছে। কারণ, দেবাঞ্জন দেব পুরসভার যুগ্ম-কমিশনার পরিচয় দিয়ে কলকাতা ও শহরতলিতে ভুয়ো ভ্যাকসিন ক্যাম্প আয়োজন করেছিলেন। এছাড়াও তিনি একাধিক সংস্থাকে কর্পোরেশনের প্যাডে ঔষধ ও নানা সামগ্রী সরবরাহের "ওয়ার্ক অর্ডার" দিয়েছিলেন। এমনকি প্রতি ক্ষেত্রেই তিনি হুবহু পুরসভার নিজস্ব "পুরশ্রী বিবর্ধন" হলোগ্রাম ব্যবহার করেছিলেন। তার গলায় সব সময় ঝুলত যুগ্ম কমিশনারের ভুয়ো আইডি কার্ড। এখানে প্রশ্ন উঠছে যে দেবাঞ্জন দেব পুরসভার এইসব জিনিস কোথা থেকে জোগাড় করত? এছাড়াও সম্প্রতি কসবার শান্তিপল্লীতে সিট অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে দেবাঞ্জন দেবের ভুয়ো আইএএস ও প্রতারণা চক্রের বহু বিস্ফোরক নথি এবং পুরসভার নকল প্যাড, হলোগ্রাম।
কলকাতা পুরসভার কাছে সিট আজ ৫ দফা প্রশ্ন করেছে এবং খুব দ্রুত সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশ্নমালাটি হল নিম্নরূপ:
১) দেবাঞ্জন দেবকে পুরসভা যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার কোনও পরিচয়পত্র দিয়েছিল কি না? যে আইডি কার্ডের সিরিয়াল নম্বর ই-১২৫৯৭ এবং পুরকর্মীর নম্বর ২৫৭৫৭।
২) পুরসভার নিজস্ব হলোগ্রাম দেওয়া ১২০টি ‘পুরশ্রী বিবর্ধন’ লোগো দেবাঞ্জনদেব বা পুরনিগমের কর্মচারী নন কখনও কোনও সময় দেওয়া হয়েছিল কি?
৩) কসবার (Kasba) ১৭০ শান্তিপল্লিতে কলকাতা পুরসভার কোন স্পোর্টস ফেডারেশনের অফিস আছে কি না? অথবা ওই ঠিকানায় স্পোর্টস ফেডারেশনের নামে কোন লেটার হেড পুরসভা ব্যবহার করত কি?
৪) তদন্ত সূত্রে খবর, ৯ ইন্ডিয়ান এক্সচেঞ্জ প্লেস, রুম নম্বর-১২ (তৃতীয় তল) এর ঠিকানায় ‘লেজার হলোগ্রাম প্রাঃ লিমিটেড’ নামে সংস্থাকে পুরসভা কি হলোগ্রাম তৈরির কোন ওয়ার্ক অর্ডার দিয়েছিল?
৫) শরণ্যা আঢ্য, পিতা সুব্রত কুমার আঢ্য নামে (আইডি নম্বর পি-২৫৭৬৯) পুরসভায় কোন কর্মী কাজ করেন?
প্রশ্নমালার উত্তর দেওয়ার জন্য গতকাল সন্ধ্যায় পুর কমিশনার বিনোদ কুমারের ঘরে শীর্ষ অফিসাররা জরুরি বৈঠক করেন। চিঠির কথা জানানো হয় মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমকে। এবার পুরসভার উত্তর জানার পর সিট ঘটনা তদন্ত কতটা আগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, সেটাই দেখার।