এবারে খাস কলকাতায় এস টি এফ পাকড়াও করল তিনজন জেএমবি জঙ্গিকে। ওই তিন ব্যক্তির নাম নাজিউর রহমান ওরফে জয়রাম, রবিউল ইসলাম এবং সাব্বির ওরফে নিখিলকান্ত। রবিবার দুপুর দুটো নাগাদ সূত্র মারফত খবর পাওয়ার পরে আলিপুর মহাত্মা গান্ধী রোডে অভিযান চালিয়ে লালবাজারের এসটিএফ টিম এই তিনজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে। ইতিমধ্যেই ওই তিনজনের সঙ্গে জেএমবি জঙ্গি সংগঠনের যোগসুত্র খুঁজে পেয়েছে লালবাজার।
আদতে বাংলাদেশ গোপালগঞ্জের বাসিন্দা ওই তিনজনের কাছ থেকে ইতিমধ্যেই জেহাদী বই পত্র পাওয়া গেছে। এছাড়াও একটি ডায়েরি পাওয়া গেছে যেখানে বেশকিছু জেএমবি নেতাদের নম্বর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ। এছাড়াও ধৃতদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট স্ক্রল করে বেশকিছু জিহাদী মন্তব্য এবং জেহাদী যোগের সূত্র পেয়েছে লালবাজার। এছাড়াও পাকিস্তান গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইএস এর গোপন কিছু নথি এবং যোগসুত্র মিলেছে তাদের কাছ থেকে।আগামীকাল তাদের ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হবে বলে জানা যাচ্ছে।
জোকা ক্যান্সার হাসপাতাল এর কাছে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে ওই তিনজন আত্মগোপন করে ছিল বলে খবর। গোপন সূত্র মারফত খবর পাওয়ার পরে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, একজন ক্যান্সার রোগীর আত্মীয় হিসেবে পরিচয় দিয়ে ওই বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল ওই তিনজন। পুলিশের অনুমান বেশ কিছুদিন ধরে ওই বাড়িতে তারা থাকছিল। লালবাজার এসটিএফ ডিসি অপরাজিতা রায় জানিয়েছেন, প্রায় দু মাস এর উপর কলকাতাতে অবস্থান করছিল এই তিনজন জঙ্গি। মশারি এবং ফল বিক্রি করে এরা উপার্জন করতো। এছাড়াও জেএমবি ফান্ড কালেকশন এবং নিয়োগের দায়িত্বে বহাল ছিল এই তিনজন। বাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করার চেষ্টা করছে লালবাজার।
খাগড়াগড় কান্ড থেকে বাংলায় জেএমবি জঙ্গিদের যোগাযোগ মিলতে শুরু করে। তারপর থেকে লাগাতার জেএমবি জঙ্গিদের সন্ধানে হন্যে হয়ে ঘুরছে কলকাতা পুলিশ। নাজিমুদ্দিন বলে বীরভূম থেকে এক ব্যক্তিকে ধরা হয়েছিল ডিসেম্বর মাসে। জেএমবি বীরভূম মডিউল এর সদস্য ছিল নাজিমুদ্দিন। তারপর থেকেই পশ্চিমবঙ্গে জেএমবি জঙ্গিদের যোগসুত্র আরো স্পষ্ট হতে শুরু করে। পুলিশের ধারণা ছিল, পশ্চিমবঙ্গে আরও বেশকিছু জেএমবি জঙ্গির ঘাঁটি গেড়ে বসে আছে। তারপরেই আজকে এই তিনজনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের এসটিএফ শাখার একটি বড়সাফল্য হিসেবে চিহ্নিত হবে এটি।
৩ অভিযুক্তের কাছ থেকে বাংলাদেশ পাসপোর্ট এবং নানান নথিপত্র পাওয়া যাচ্ছে। সেই সংস্থা নথিপত্র খতিয়ে দেখার পরে জেএমবি জঙ্গিদের নিয়ে আরো বেশি তৎপর হতে শুরু করবে কলকাতা পুলিশ। পুলিশের আশা, শুধু এই তিনজন নয় আরও বেশ কয়েকটি মাথা জরিয়ে আছে এই চক্রের সঙ্গে। এই তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি দাগী অপরাধীদের খোঁজ চালাতে উদ্যোগী হচ্ছে কলকাতা পুলিশ।