ফের অমানবিকতার এক নজির তৈরি হল কলকাতার বুকে। ভিড় বাসে একজন নামকরা লেখক, প্রকাশক স্থান পেলেন না বসে আসার। সিনিয়র মানুষ হয়েও জুটল না আসনটুকু। অথচ এক ঝাঁক তরতাজা যুবক সিটে বসে 'গসিপ' করতে করতে বাড়ি ফিরল। কিন্তু সেই মানুষটির জন্য কোন স্থান সঙ্কুলান হল না। অগত্যা তিনি বাসের মেঝেতেই বসে পড়লেন। গোটা রাস্তাটাই তিনি ওইভাবেই ফিরলেন। কেউ ঘুরেও তাকালেন না।
জনৈক সুখময় মন্ডল নামে একজন ব্যক্তি তাঁর ফেসবুক ওয়ালে বলেছেন, অধীর বিশ্বাস যিনি একজন প্রথিতযশা সাহিত্যিক, সঙ্গে গাঙচিল প্রকাশনার কর্ণধারও বটে। বইমেলা সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। করুণাময়ী থেকে বিধাননগর যাওয়ার পথে বাসে অনেক সিট থাকা সত্ত্বেও বসার জায়গা পেলেন না। কারণ কী? আগেই বাসের সিটগুলো ধরে রাখা হয়েছে। কথা কাটাকাটি হল কিন্তু স্থান হল না। অগত্যা তিনি মেঝেতেই বসে পড়লেন।
সুখময় মন্ডল নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, "শুনি ট্রেনে হয়, বাসেও কি শুরু? বইমেলা ফেরত করুণাময়ী থেকে বিধাননগর যাওয়ার পথে সরকারি বাসে প্রচুর সিট থাকা সত্ত্বেও এই বৃদ্ধ মানুষটিকে বসতে দিলেন না যুবক-যুবতীরা। সিট দখল ছিল তিনটি। বললেন,জায়গা আছে! অভিমান কিংবা ক্ষোভে মেঝেতেই বসে পড়লেন মানুষটি? কে ইনি? এরা কি জানে? যুবক-যুবতীরাও তো বই-পীঠস্থান বইমেলা থেকে ফিরছে। বৃদ্ধটির নাম অধীর বিশ্বাস। গাঙচিলের কর্ণধার ও বিশিষ্ট লেখকও বটেন। কিছু বলতে পারলাম না। ওরা ছিল বড় গ্যাঙের। সময় রাত নটা পনেরো। দুঃখিত অধীরদা। দুঃখিত, সমাজ!"
যা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, আজকের যুব সমাজ কি স্বার্থপর, দায়িত্ব জ্ঞাণহীন হয়ে উঠেছে? নাকি এটি সামাজিক অবক্ষয়ের লক্ষণ? আবার আর একটি অংশ বলছেন, এই কয়েকজন যুবকের আচরণ থেকে সামাজিক এই বিষয়টি নিয়ে সামগ্রিক মন্তব্য করা যায় না। করোনার সময় কিংবা অন্য কোন ক্ষেত্রে এই যুব সমাজই এগিয়ে এসেছিলেন। মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন। কোন অসহায় মানুষের পাশে এঁরাই সবার আগে ছুটে যান। তবে তর্ক-বিতর্কের ঊর্ধ্বে গতকালের এই ঘটনায় ঢি ঢি পড়ে গিয়েছে সব মহলে।