সমস্ত আশঙ্কাকে সত্যি করে কলকাতায় মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোন এর সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করল কলকাতা পুরসভা। সোমবার কলকাতা পৌরসভার বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানালেন, কলকাতার মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৫। তবে এগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি পূর্ণদৈর্ঘ্যের কনটেইনমেন্ট জোন রয়েছে। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভার তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে কলকাতা পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। তার পাশাপাশি মেয়র জানিয়েছেন, যদি কোন ফ্ল্যাট, আবাসন কিংবা হোস্টেলের ৪-৫ জন করোনা আক্রান্ত হন তাহলে সেটিকে মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করবে কলকাতা পুরসভা। তার সাথেই ওই বাড়ি কিংবা আবাসনে পূর্ণ মাত্রার করোনাভাইরাস প্রটোকল লাগু করা হবে।
কলকাতার অধিকাংশ কনটেইনমেন্ট জোন মানিকতলা, ফুলবাগান, কাঁকুড়গাছি, ট্যাংরা এবার আরবানার মতো বিভিন্ন এলাকায় তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে নিউ টাউন, বিধান নগর এবং দমদম চিহ্নিত হয়েছে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে। অন্যদিকে গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, তপসিয়ার সংবাদ প্রতিদিন হাউস, উত্তর কলকাতার হরেকৃষ্ণ শেঠ লেনের লেডিস হোস্টেল সহ একাধিক জায়গা ইতিমধ্যেই লেডিস হোস্টেল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে কলকাতা পুরসভার তরফ থেকে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, মেয়র পরিষদ এবং পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই এই নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন। মেয়র আশা করছেন, যদি আগামী ১৫ দিন আরও কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় তাহলে পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
অন্যদিকে, ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের জন্য করোনা একটি অশনিসংকেত হয়ে দাঁড়িয়েছে। কলকাতায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজারের নিচে নামলেও উত্তর ২৪ পরগনার মত জেলায় করোনা সংক্রমণ ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই সক্রিয় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে রাজ্যে। সোমবার স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফ থেকে যে বুলেটিন প্রকাশ করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬,০৭৮ জন, যার মধ্যে কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছেন ২,৮০১। অন্যদিকে হাওড়া, হুগলি, এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। রাজ্যের ১২টি জেলায় ইতিমধ্যেই দৈনিক সংক্রমণ ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী। হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা সহ সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে মুর্শিদাবাদ, মালদহ, পশ্চিম ও পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, এবং দার্জিলিঙে। শেষ ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে করোনাভাইরাস এর কারণে মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। তারমধ্যে কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনায় মৃত্যু হয়েছে ৪ জন করে রোগীর। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মৃত্যু হয়েছে একজনের। তার সাথে সাথেই, সোমবার করোনা ভাইরাসকে হার মানিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২,৯১৭ জন।