বাংলা সংবাদমাধ্যম জগতে নক্ষত্রপতন হল। রবিবার রাতে প্রয়াত হলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। কোভিড(Covid) আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। প্রাথমিক অবস্থায় সেরে উঠলেও শেষ পর্যন্ত কোভিড পরবর্তী শারীরিক জটিলতায় তিনি ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। ভর্তি ছিলেন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তাঁর মৃত্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় শোকপ্রকাশ করেছেন।
গত ১৪ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হন তিনি। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। তবে এরপর তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে। অবস্থার অবনতি হলে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। পরে একমো সাপোর্টেও রাখতে হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। রবিবার রাত ৯ টা ২৫ নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সেই সঙ্গে শেষ হল তাঁর সাংবাদিক জীবনের বর্ণময় ৩৫ টি বছর।
বর্ধমানের কয়লাখনি অঞ্চলে বেড়ে ওঠা অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ছাত্রজীবনে ছিলেন কৃতী ছাত্র। স্কুল জীবন ছিল নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন, এর প্রেসিডেন্সি কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলা বিষয়ে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত প্রথম বিভাগে প্রথম কৃতী ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করেই প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় সাংবাদিকতার কাজে ঢোকেন। ধীরে ধীরে প্রিন্ট মিডিয়া থেকে ডিজিটাল মিডিয়ায় কাজ শুরু করেন। দীর্ঘদিন জি ২৪ ঘণ্টায় কাজ করেছেন। অসাধারণ মেধা, মনন, বিচক্ষণতা, বাংলা শব্দচয়ন দক্ষতা তুখোড় সাংবাদিককে মনে রাখবেন বাংলা তথা গোটা দেশের মানুষ।
অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, "বাংলার অন্যতম সেরা টেলিভিশন সঞ্চালক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে দুঃখিত। তাঁর পরিবার ও সহকর্মীদের সমবেদনা জানানোর কোনও ভাষা নেই।" রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় এক টুইট বার্তায় শোকজ্ঞাপন করে বলেছেন, অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে তিনি হতবাক এবং শোকাহত। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীসহ গোটা বাংলার অসংখ্য মানুষ অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন।