নয়া পরিকল্পনা কলকাতা হাইকোর্টের (Kolkata HighCourt)। এবার গণপরিবহণে মহিলাদের নিরাপত্তা দিতে মরিয়া হাইকোর্ট। গণপরিবহণে মহিলাদের ক্ষেত্রে কোনো সুরক্ষা হেল্পলাইন কিংবা সিসিটিভি চালু করা যায় কি না, রাজ্যের কাছে তা নিয়ে মতামত চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। সূত্রের খবর, ১২ অগস্টের মধ্যে আদালতে হলফনামা আকারে তা জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, গণপরিবহণে মহিলাদের নিরাপত্তার দেওয়া নিয়ে উচ্চ আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেন রেনু প্রধান নামে এক মহিলা। অভিযোগ, বাস বা ট্রেনে প্রায়শই মহিলাদের উপর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। কিন্তু ঘটনা ঘটার সময় সাহায্য পাওয়া যায় না। আবার অনেক ক্ষেত্রে দোষীকে চিহ্নিত না করতে পারার জন্য পুলিশও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে না। এতে সুরক্ষার অভাব বোধ করছেন মহিলারা।
মূলত এই মামলার প্রেক্ষিতেই অঙ্কন বিশ্বাস নামে এক নাগরিক আবেদন জনান, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরাও (ট্রান্সজেন্ডার) গণপরিবহণে সুরক্ষিত নন। এরপরেই এই বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ মামলার শুনানিতে বলেন, অন্যান্য রাজ্যে যদি নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকতে পারে। তাহলে এ রাজ্যে নয় কেন? তাছাড়া একটি বাসের যা বাজারমূল্য, তাতে বাসের ভিতরে একটি সিসিটিভি লাগানো যেতেই পারে।
এরপরেই বিচারপতি বিন্দল আরও বলেন, শুধু সরকার নয়, সাধারণ মানুষকেও এ নিয়ে সতর্ক হতে হবে। তিনি বলেন, "এটা একটা মানসিকতা। যা ছোট থেকেই বদলানো দরকার। গণপরিবহণে কেমন ব্যবহার করা উচিত, তা শিশুপাঠ্য পুস্তকে থাকলেও ভাল হয়। রাজ্যের এ ব্যাপারেও ভাবনাচিন্তা করা উচিত।" প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র মহিলারা নয়। অনেক ক্ষেত্রেই মিথ্যে অপরাধে ফাঁসতে হয় বহু পুরুষকে।
কাজেই, গণপরিবহণের ক্ষেত্রে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলে সহজেই অপরাধীকে চিহ্নিত করা সম্ভব। এছাড়াও বাসের ভিতরে, বাইরে এবং যাত্রী প্রতিক্ষালয়ে মহিলা হেল্পলাইন নম্বর রাখার পরার্মশও দেওয়া হয়েছে হাইকোর্টের তরফে। পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্যও আলাদা নম্বরের ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়েছে। তবে এই পুরো পরিকাঠামো তৈরি করা আদৌ সম্ভব কি না এবং কত খরচ হতে পারে, তা রাজ্যের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে। ১২ অগস্টের মধ্যে এ বিষয়ে রাজ্যকে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।