দেবাঞ্জন দেব আর শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রেশ কাটতে না কাটতেই শহরে পুলিশের জালে ধরা পরল আরও এক প্রবঞ্চক। সুমন ভৌমিক নামের ঐ ব্যক্তি নিজেকে বিধাননগর পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে বহু মানুষের সাথে প্রতারনা করে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার রাতেই ‘গুনধর’কে পাকড়াও করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।
যদিও পুলিশ তদন্ত করে জানতে পেরেছে ঘটনার সূত্রপাত বছর দেড়েক আগে। হরিদেবপুরের বাসিন্দা রাজদেও সিং সরকারী প্রকল্পের টেন্ডার নেন। তাঁর কাছেই গত বছর ফেব্রুয়ারিতে নিজেকে বিধাননগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের টেন্ডার শাখার সাব-ইন্সপেক্টর হিসাবে পরিচয় দেন অভিযুক্ত। তাঁকে বিধাননগর এলাকায় বাতিস্তম্ভ লাগানোর কথা বলে টোপও দেয় সুমন। রাজদেও এ বিষয়ে রাজি হলে তাঁকে মোট আট কোটি কুড়ি লক্ষ টাকার টেন্ডারের জন্য রেজিস্ট্রেশান ফি সহ বাড়তি খরচের কথা জানায় সুমন ভৌমিক।
সুমনের পাতা ফাঁদে পা দেন রাজদেও। তিনি প্রথমে আট লক্ষ টাকা দেন সুমনকে। এরপর বিভিন্ন সময় নানান ভাবে নানান ছলনা করে মোট ৪৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় অভিযুক্ত ও তার সঙ্গিসাথীরা। শুধু তাই নয়, টাকা নেওয়ার পরেও তাঁর গাড়িও কাজের নাম করে হাতিয়ে নেয় প্রবঞ্চকের দল। এত টাকা দিয়েও কাজ হচ্ছে না দেখে রাজদেও বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। এই ঘটনায় রাজদেও সুমন ছাড়াও আরও তিনজনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানান। যাদের দুজন সাব-ইন্সপেক্টর ও একজন অ্যাডিশনাল ডিসি-র সহকারীর পরিচয় দেয় রাজদেওকে।
এ বিষয়ে এই বছর এপ্রিলেই চারু মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রাজদেও। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। তদন্ত করে তাঁরা জানতে পারেন সুমন ভৌমিক বিধাননগর ট্রাফিক পুলিশের সিভিক ভলেন্টিয়ারের কাজ করত। বছর দেড়েক আগেই সে তার কাজ ছেড়ে প্রতারনার সাথে যুক্ত হয়। বিধাননগরে সুমন একটি বার তৈরি করেছে বলেও তদন্তে উঠে আসে। এটি তার প্রথম প্রতারনা নয়। এর আগেও প্রায় ৫-৬ জন মানুষকে প্রতারিত করেছে সুমন। বুধবার তাকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হলে আদালত তাকে অগাস্টের ৬ তারিখ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। বাকি তিন প্রতারকের সন্ধান করছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।