কোভিড অতিমারিতে (Covid-19) কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে ভর্তির বিষয়ে তৈরি হয়েছে টানাপোড়েন। বিশেষ করে একক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলি এতদিন প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি নিয়ে আসছিল। কিন্তু কোভিড অতিমারির জেরে গতবার প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে বলার পরও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে যেতে হয় প্রেসিডেন্সি (Presidency University) কিংবা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে (Jadavpur University)। নম্বরের ভিত্তিতে পরীক্ষা নিতে হয়। রাজ্যের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এবারও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে না বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। প্রেসিডেন্সির পাশাপাশি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্য বিভাগের পাঁচ বছরের ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তির প্রবেশিকা নেওয়াও বন্ধ রাখল বোর্ড।
সূত্রের খবর, বুধবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। সেখানে শিক্ষামন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন কোভিড পরিস্থিতিতে স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর স্তরে কোন ভর্তির পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। শেষ পরীক্ষার প্রাপ্ত ফলের ভিত্তিতে ভর্তি নিতে হবে। যদিও এ নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। সেখানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোধিয়া বলেন, গত বছর গুলোর মতো এবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষা হবে। গত বছর গুলোর মতো পরীক্ষা নেবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। ইতিমধ্যেই পরীক্ষার দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে বোর্ড। সেই মোতাবেক শিক্ষার্থীরা আবেদনও করেছেন। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের পর এই জটিলতা তৈরি হয়। যদিও পরে উচ্চশিক্ষা দফতর, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে বলা হয়।
এই বৈঠকের পরই আর কোন নতুন বৈঠকের প্রয়োজন হয়নি বলে সূত্রের খবর। জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড এর মধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছে একক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে আর এ বছর প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে না। ভর্তির কাউন্সেলিংও হবে না। শুধু তাই নয়, নতুন নির্দেশ না আসা পর্যন্ত প্রবেশিকা পরীক্ষা বোর্ড আপাতত স্থগিত রাখছে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে অসন্তোষ, তেমনটাই সূত্র মারফত খবর। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশের দাবি, প্রেসিডেন্সি কিংবা যাদবপুরের মতো ঐতিহ্যশালী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা বজায় রাখতে হলে প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা আছে। বিশেষ করে এ বছর কোভিড পরিস্থিতিতে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির কোন বোর্ডের পরীক্ষা হয়নি। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ধরে রাখতে প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রয়োজন আছে। কিন্তু কোভিড অতিমারিতে কীভাবে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে, তাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।