একুশের নির্বাচনে (Assembly Election) সিপিএম (CPM) কংগ্রেসের ঝুলিতে শূন্য। অন্ধকারের মধ্যে শেষ সলতের প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখেছে সংযুক্ত মোর্চার আইএসএফ (ISF) প্রার্থী নওসাদ সিদ্দিকী। জোট সঠিক ছিল নাকি বেঠিক ছিল - সে নিয়ে বিস্তর জলঘোলার পর সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি সাফ জানিয়ে দিল জোট নির্বাচনী বৈতরণি পার করালেও তা কখনোই দীর্ঘমেয়াদী নয়। নির্বাচনের সময় সংযুক্ত মোর্চা কতটা প্রয়োজনীয় কিংবা তার কতটা সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তর আলোচনার পর সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি সাফ জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচনের সময় জোটের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও তা কখনোই দীর্ঘস্থায়ী জোট হতে পারে না। কেন্দ্রীয় কমিটির এই সিদ্ধান্তের পর জোটের ভবিষ্যত যে বিশ বাঁও জলে তা মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক একাংশ।
গত কয়েক দিন আলিমুদ্দিনের প্রত্যেকটি ঘর সরগরম। একুশের নির্বাচনে সিপিএমের ফলাফল নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে চলে চুলচেরা বিশ্লেষণ। কেন্দ্রীয় কমিটি সংযুক্ত মোর্চার ভবিষ্যত জানতে চায়। পাশাপাশি রাজ্যে সংযুক্ত মোর্চার প্রয়োজন কেন হল কিংবা জনমানসে সংযুক্ত মোর্চা কতটা প্রভাব তৈরি করেছে - তা বিশ্লেষণ করতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় সুজন চক্রবর্তী, মৃদুল দে প্রমুখ নেতৃত্বদের। একুশের নির্বাচনে আইএমএফের সঙ্গে জোটে কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল কীনা তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রকাশ কারাত এবং সীতারাম ইয়েচুরিদের রীতিমতো উষ্মা প্রকাশ করতে দেখা যায় বলে সূত্রের খবর। তিনদিনের এই বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, নির্বাচনের সময় জোটের প্রয়োজনীয়তা কতটা ছিল সে বিবেচনার বাইরে গিয়ে জোটের ভবিষ্যত কি জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি এ-ও বলা হয়েছে জোটের ভাবনা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না।
উল্লেখ্য, ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যেভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের জোটকে 'পার্টি বিরোধী' আখ্যা দিয়েছিল, এবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সে পথে না গিয়ে জোটের ভবিষ্যত নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী ভাবনায় ইতি টেনেছেন বলে সূত্রের খবর। তবে জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোটে সিপিএম থাকবে বলে জানা গেছে। সিপিএমের এই সিদ্ধান্তকে অনেকে কেরল মডেলের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তবে আলোচনা যাই হোক জোটের ভবিষ্যত কী তা জানার অপেক্ষায় থাকবে ওয়াকিবহাল মহল।