দীর্ঘ বিতর্কের পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (Calcutta University) ঘোষণা করেছে যে স্নাতক স্তরের অন্তর্বর্তী সেমিস্টারের মূল্যায়ন ইউজিসির নির্দেশ মেনে করা হবে। আসলে গত মাসের প্রথমদিকে রাজ্য সরকার জানিয়েছিল যে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী সেমিস্টারের পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু তার কিছুদিন বাদেই ইউজিসি (UGC) নির্দেশ দেয়, অন্তর্বর্তী সেমিস্টারের পরীক্ষা না নিয়ে মূল্যায়ন হবে আগের সেমিস্টারের ফল এবং বর্তমান সেমিস্টারের অন্তর্বর্তী মূল্যায়নের প্রাপ্ত নম্বরের ওপর ভিত্তি করে। এই দুই রকম সিদ্ধান্তে ব্যাপক বিভ্রান্তি ছড়ায়। পশ্চিমবঙ্গ কলেজ শিক্ষক সমিতি বিভ্রান্তি কাটাতে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে চিঠি পাঠান। তাতেই সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী জবাব দিয়ে বলেছেন, "বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্বাধীকার রয়েছে। তাই তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিক।"
শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্যের পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য আশিষ চট্টোপাধ্যায় গতকাল অর্থাৎ শনিবার বলেছেন, "স্নাতক স্তরের অন্তর্বর্তী সেমিস্টারের মূল্যায়নের বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসির নির্দেশিকা মেনে চলবে। এর ফলে ৫০ শতাংশ নম্বর কলেজগুলির অন্তর্বর্তী মূল্যায়ন থেকে গৃহীত হবে এবং বাকি ৫০ শতাংশ পূর্ববর্তী সেমিস্টারের প্রাপ্ত নম্বর থেকে নেওয়া হবে। অন্তর্বর্তী মূল্যায়নের নম্বরের ক্ষেত্রে পরীক্ষার নম্বর, উপস্থিতির শতাংশ ইত্যাদি দিক বিচার করা হবে।" প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সেমিস্টারের অন্তর্বর্তী মূল্যায়নের পরীক্ষা চলছে। ইতিমধ্যেই চতুর্থ সেমিস্টারের অর্নাসের থিয়োরি পেপারের পরীক্ষা শেষ। এদিকে, দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু হবে আগামী সপ্তাহ থেকে।
তবে এরমধ্যেই অধ্যক্ষদের প্রশ্ন যে সেমিস্টার পরীক্ষার নম্বরকে অন্তর্বর্তী মূল্যায়নে যোগ কি করে করা হবে? এই প্রসঙ্গে সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস সরকার এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, "বিশ্ববিদ্যালয় আজ ইউজিসি নিয়ম মেনে নির্দেশ দিয়েছে। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সেমিস্টার পরীক্ষা চলছে। এ তো পরস্পরবিরোধী।" নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী এক সংবাদমাধ্যম বলেছেন, "অন্তর্বর্তী সেমিস্টারের পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। তাহলে তা আর অন্তর্বর্তী মূল্যায়ন হয় কি করে? এই বিষয় নিয়ে কর্তৃপক্ষ আরও স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিক।"