এত বছর ধরে কেউ ফিরেও না তাকালেও করোনা আসা মাত্রই ওষুধের বাজারে একেবারে সম্রাটসম হয়ে উঠেছে ভিটামিন সি ট্যাবলেট। এই ভিটামিন সি ট্যাবলেটের আদতে নামটি হলো অ্যাসকরবিক অ্যাসিড ট্যাবলেট। সাধারণত আমলকি বা যেকোনো টক জাতীয় ফলে এই ভিটামিন-সি মেলে। তবে বাজারে বর্তমানে বিভিন্ন ট্যাবলেট উপলব্ধ যেখানে আপনারা এই অ্যাসকরবিক অ্যাসিড বা ভিটামিন-সি পেয়ে যাবেন। করোনার আগে পর্যন্ত সাধারণত এই ধরনের ট্যাবলেট খুব একটা বিক্রি হতো না। কিন্তু, এখন প্রত্যেক মানুষ যেন বাড়িতে পাহাড় বানিয়ে রাখতে চাইছেন এই ধরনের ওষুধের। ভিটামিন সি ছাড়াও আরও একটি ওষুধ হঠাৎ করে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। সেটি হল জিংক এবং মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট এর ওষুধ।
এই ধরনের ওষুধ সাধারনত আমাদের ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। বর্তমানে প্রত্যেক লোকে ভয়ে রয়েছেন, করোনা না হয়ে যায়। তাই এইধরনের ট্যাবলেট লোকের মুড়ি-মুড়কির মতো খাচ্ছেন অগুনতি। দুপুর হোক কিংবা রাত খাওয়ার পরেই হজমি গুলি জায়গায় এখন ভিটামিন-সি এর বড়ি চলে যাচ্ছে লোকের মুখে। এবং একদিক থেকে লোকের ভয় পাওয়াটা সম্পূর্ণ সঠিক। কিন্তু, করোনা আক্রান্ত না হয়েও এই ধরনের ওষুধ অগুন্তী খেয়ে ফেলার ফলে শেষে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন আসল করোনা আক্রান্ত রোগীরা। তারা নির্দিষ্ট সময়ে ওষুধ পাচ্ছেন না।
তাই ওষুধ কেনার হিড়িক রুখে দেওয়ার জন্য নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র যদি আপনি প্রেসক্রিপশন আনেন তাহলে কিন্তু এবার থেকে ভিটামিন সি এবং জিংক এর ওষুধ আপনি কিনতে পারবেন। তার পাশাপাশি ডক্সিসাইক্লিন, ডেক্সামিথাজোন এবং আইভারমেকটিন জাতীয় ওষুধ এই তালিকায় রয়েছে। আইভারমেকটিন এটিঅ্যান্ডটি প্যারাসাইটিক ওষুধ। এই ওষুধটি কিন্তু করোনা আক্রান্ত রোগীদের শরীর থেকে ভাইরাল লোড কমিয়ে দিতে পারে। জানাজানি হতেই আইভারমেকটিন বিক্রি হচ্ছে দেদার। অনেকে আবার বলছেন, কবে অসুখ হবে ঠিক নেই পরিবারের লোকেদের জন্য একটা করে পাতা কিনে রাখি। অনেকে আবার বাড়িতে হাঁপানির ওষুধ পর্যন্ত রেখে দিচ্ছেন। বুডেসোনাইড জাতীয় ওষুধগুলি হাঁপানি রোগীদের ক্ষেত্রে ইনহেলারে ব্যবহার হয়। এই ধরনের ওষুধ আপনি ব্যবহার করেন তাহলে মৃদু করোনা আক্রান্ত রোগীরা স্বস্তি পেতে পারবেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে গত দু'দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের কোন দোকানে না পাওয়া যাচ্ছে ভিটামিন সি, আর না পাওয়া যাচ্ছে অন্যান্য ওষুধ গুলি। এমনকি লোকে বুডেসোনাইড পর্যন্ত কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে বেকায়দায় পড়েছেন করোনা রোগীরা। তাদের স্বস্তি দিতেই নতুন পদ্ধতি নিল সরকার।