একটা গল্প থেকে সেটা সিনেমা বা সিরিজ কখন হয়ে ওঠে? তার জার্নিটা কেমন? আর কোথায় পৌঁছানো তার লক্ষ্য? এইসব প্রশ্ন গুলোই মাথায় ঘুরছিলো Scam 1992 দেখার সময়। শুধু প্লট বা গল্পের জোরে একটা সিরিজ কতটা ভালো লাগতে পারে সেটাও মনে হচ্ছিলো দেখতে দেখতে। ১৯৯২ সালে ভারতের একটি আর্থিক দুর্নীতির গল্প নিয়ে তৈরি সিরিজ Scam 1992।
গল্পের পুরোভাগে শেয়ার ব্যবসায়ী হরসদ মেহেতা। কিভাবে একটি সাধারণ মানুষ নিজের উন্নতির স্বার্থে বা বাকিদের হারানোর স্বার্থে দুর্নীতির পথ বেছে নেয় সেটাই এই সিরিজের মূল বিষয়। আর সেই দুর্নীতির মধ্যে যখন এসে পড়ে রাজনীতি, ভোট, ক্ষমতা, এমনকি প্রধানমন্ত্রীও—তখন? কি হয় দুর্নীতিতে জড়িয়ে থাকা মানুষগুলোর? কিংবা যখন বোঝা যায় দুর্নীতিতে প্রধানমন্ত্রীর নাম ফাঁস হয়ে যেতে পারে যেকোনো সময়—তখন? কি ভাবেন তদন্তকারী অফিসাররা? সিস্টেমের মধ্যে থেকে সেই সিস্টেমের তদন্ত! নাকি কাউকে বলির পাঁঠা দাঁড় করিয়ে বড়ো নামগুলো আড়াল করা? আর যাকে সামনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে তিনি যদি হন হরসদ মেহেতা? কি পাল্টা খেলেন তিনি? সবটা নিয়ে Scam 1992।
১৯৯২ সালে দাঁড়িয়ে প্রায় ৫০০০ কোটির দুর্নীতি! সেখানে সংবাদমাধ্যম কি করছিলো? কিভাবে সিস্টেমের লোকেরা গোপনে পাশে দাঁড়িয়েছিলো সাংবাদিকদের? সবই ধরা পড়ে Scam 1992- এর গল্পে। সাংবাদিক সুচেতা দালাল এবং দেবাশিস বাসুর ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত বই ‘The Scam: Who Won, who Lost, who Got Away’ অবলম্বনে পরিচালক হানশল মেহেতা তৈরি করেছেন এই সিরিজ।
তথাকথিত কোনো বড়ো মুখ নেই এই সিরিজে। কোনো চমক দেওয়ার বাড়তি চেষ্টা নেই। উল্টে একটা এতবড়ো ঘটনাকে খুবই ‘প্রতিদিনকার ঘটনা’-র মতো করে দেখানোর প্রয়াস আছে Scam 1992 তে। আজ ২০২০ তে দাঁড়িয়ে প্রায় আট ঘণ্টার একটা সিরিজে ৩০ বছর আগের সময়কে ধরা খুব চ্যালেঞ্জিং। প্রতিটা টেবিল চেয়ার বাড়ির স্ট্রাকচার সবটাই ৩০ বছর পিছনের মতো সাজাতে হয়। আর এই ক্ষেত্রে Scam 1992-র টিম নিপুণতার ছাপ রেখে গেছে। সবমিলিয়ে ৩০ বছর আগে পিছিয়ে গিয়ে দেশের সবথেকে বড়ো আর্থিক দুর্নীতির বিষয়ে জানতে Scam 1992 অবশ্যই দেখতে হবে।