মুদির দোকানে বিক্রি করা হচ্ছে বেআইনিভাবে মদ, এই খবর জানাজানি হতেই সেই মদের দোকানির উপরে চড়াও হলেন গ্রামের মহিলারা। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে কৃষ্ণগঞ্জ এর মুকুন্দপুর এলাকায়। অভিযোগ সেই সময় গ্রামের মহিলারা দোকানের ভিতরে ঢুকে মদ খুঁজে বের করে। তৎক্ষণাৎ দোকানের মালিক অর্থাত অভিযুক্ত মদ বিক্রেতার গ্রামের মহিলাদের দিকে হাসুয়া নিয়ে তেড়ে যান। পুলিশ এসে অবস্থা সামাল দেয়। স্থানীয় মহিলারা অভিযোগ করেছেন এই মুদির দোকানে দীর্ঘদিন ধরে এই বেআইনি মদ বিক্রি করছেন এই মুদি দোকানি। দোকান একটু ফাঁকা দেখলেই দোকানে গিয়ে মদ চাইলে তার হাতে বাংলা মদ তুলে দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এই মুদি দোকানের আড়ালে মদের বেআইনি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ওই দোকানদার।
বিশেষ করে অল্প বয়সের ছেলেরা মদের প্রতি বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে। যার ফলে বাড়িতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। লকডাউন এ আয়ের পরিমাণ অত্যন্ত কম কিন্তু তার মধ্যে, এই মদের ব্যবসা চালু হবার কারণে অনেকেই টাকা উড়িয়ে আসছে মদের জন্য। এর ফলে গ্রামের সকলের মনেই অসন্তোষ দানা বাধতে শুরু করেছে। এর আগেও বহুবার গ্রামের মহিলারা গিয়ে ওই দোকানে মদ বিক্রি করতে বারণ করে দিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা, বহাল তবিয়তে দোকানদার গদাধর মন্ডল মদ বিক্রি করে আসছিলেন। অনেক বাড়িতে এই নিয়ে সমস্যা চরমে উঠেছিল। তাই এদিন গ্রামের মহিলারা চরম পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হলেন। অবশ্য জেলার আবগারি দপ্তর এর সুপার অর্ণব কুমার দে বলেছেন, "আমরা জেলাজুড়ে এরকমভাবে বেআইনি মদ বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি। অনেকে গ্রেফতার হয়েছে। ইতিমধ্যেই অনেক মদ আটক হয়েছে। মুকুন্দপুর ঠিক কি ঘটেছে তা খোঁজ নিয়ে সঠিকভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।"
বৃহস্পতিবার রাতে নিজেরাই সক্রিয়ভাবে দোকান ঘরের ভিতরে ঢুকে শ'খানেক মহিলা সমস্ত মদের বোতল খুঁজে বের করে ধ্বংস করে দেন। এই ঘটনা দেখে মারমুখী হয়ে ওঠেন দোকানদার গদাধর মন্ডল। তিনি তাদের উদ্দেশ্যে হাসুয়া নিয়ে তেড়ে যান বলে অভিযোগ। পুলিশ এসে গদাধরকে পাকড়াও করতেই তিনি জানান, "আমার ভুল হয়ে গিয়েছে। আমি আর কোনদিনও মদ বিক্রি করব না। ওরা আমার স্ত্রীকে নিয়ে টানাটানি করেছিল বলে আমি মাথা ঠিক রাখতে না পেরে হাসুয়া নিয়ে তেড়ে গিয়েছিলেন। এমন ভুল আর হবেনা।" অন্যদিকে মদের দোকানে হানা দেওয়া মহিলাদের মধ্যে শম্পা মন্ডল বলেছেন, "দীর্ঘদিন ধরে ওই মুদির দোকান থেকে মদ বিক্রি করা হচ্ছে। ছেলেরা মদের পিছনে সমস্ত টাকা খরচ করে ফেলছে। এমনিতেই এই সময়ে মানুষের হাতে আয় নেই। তার মতে মদের পিছনে এত টাকা খরচ করার কারণে অনেক পরিবারের আয় একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। অবশেষে এই সব সহ্য করতে না পেরে গ্রামের মহিলারা গিয়ে এসব ভেঙে দিয়েছি।"