সোনারপুরের সুজয় সাহা এবং ঝিলমিল বিশ্বাস (নাম ও পদবি পরিবর্তিত) এই জানুয়ারির শেষেই বিয়ে ঠিক। দীর্ঘদিনের সম্পর্ক সাতপাক ঘুরে শিলমোহর পড়তে চলেছিল। সব ঠিকঠাক। বাড়িভাড়া, ক্যাটারার, হল বুকিং, বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র বিলি, কেনাকাটা প্রায় সবটাই সেরে ফেলেছিলেন সুজয়-ঝিলমিল। কেবল ছাদনাতলাতে যাওয়াটুকুই ছিল বাকি! এমন অবস্থায় করোনার নয়া বাড়বাড়ন্তে রীতিমতোই গোটা পরিকল্পনাই ভেস্তে যেতে চলেছে। ঠিক কী পরিস্থিতি তৈরি হবে এই মাসের শেষের দিকে তাই নিয়ে চিন্তিত বাড়ির লোকজন। কেবল সুজয়-ঝিলমিল নয়, এমনই অসংখ্য মানুষ পড়েছেন বিপদে।
করোনার নয়া সংক্রমণে জারি হয়েছে সরকারি নির্দেশিকা। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে যেকোন অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি আমন্ত্রিত ব্যক্তি থাকতে পারবেন না। এমন অবস্থায় যাঁরা ইতিমধ্যেই অসংখ্য মানুষদের নিমন্ত্রণ করেই ফেলেছিলেন, তাঁরা কোন পথে হাঁটবেন সেই এখন চিন্তার বিষয়। কাকে রাখবেন আর কাকে বাদ দেবেন - এ তো গভীর সমস্যার বিষয়। এমন অবস্থায় অনেকেই অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে কেবল মালাবদল সেরেই রেজিস্ট্রি বিয়ের দিকেই ঝুঁকছেন। কিন্তু সমস্যায় পড়েছেন তাঁরাই, যাঁরা ইতিমধ্যেই সমস্ত কিছু বুকিং করে ফেলেছেন। ক্যাটারার থেকে হল বুকিং কোনটাই বাদ নেই। পরিস্থিতির কারণে সেসব বুকিং পুরোটাই বাতিল করতে হচ্ছে।
অনেকেই আবার বিয়ে পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ছাদনাতলায় বসা যাবে বরং এখন বেঁচে থাকি আগে, এমনই মনোভাব একাংশের। কিন্তু বিয়ের মরশুমের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অসংখ্য মানুষের মাথায় হাত। ক্যাটারার থেকে ফুল বিক্রেতা কিংবা হল ভাড়া সবটাই এখন ঝুলে আছে পরিস্থিতির উপর। চলতি জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি থেকেই শুরু হচ্ছে বিয়ের মরশুম। কীভাবে সেই বিয়ের মরশুম কাটবে তাই নিয়েই আশঙ্কায় একাংশ।
ডেকোরেটর থেকে ক্যাটারার মালিকদের মাথায় হাত। আমন্ত্রিত মানুষের সংখ্যা একধাক্কায় ৫০০ থেকে ৫০-এ নেমে আসতেই তাঁদের মাথায় হাত। ব্যবসার তো বারোআনাই ক্ষতি। অনেকেই বুকিং বাতিল করছেন কিংবা সংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছেন। বাধ্য হয়ে ক্যাটারার মালিকরাও ওর্ডার বাতিল করছেন। যদিও একাংশের প্রশ্ন এইভাবে আর কতদিন! ফের কি সেই আগের ভয়াবহ দিন ঘনিয়ে আসছে! জানেন না কেউই, তবে আতঙ্ক চোখেমুখে।