উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পক্ষ থেকে এবারে জারি করে দেওয়া হল একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির জন্য একটি নতুন মাপকাঠি। তবে শুধু বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়াদের জন্য এই নতুন মাপকাঠি চালু করা হয়েছে। দশম শ্রেণীতে ফল প্রকাশের পর এই প্রথমবার নজিরবিহীনভাবে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য মাপকাঠি তৈরি করা হলো। বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়াদের জন্য সংসদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই বিভাগে ভর্তি হতে গেলে ন্যূনতম কিছু নম্বর পেতেই হবে প্রত্যেকটি বিষয়ে।
এবছর করোনা পরিস্থিতি থাকার কারণে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই কার্যত পরীক্ষা না দিয়েই নবম শ্রেণীতে পাওয়া নম্বরের ভিত্তিতে পাস করেছেন অনেকে। আর এই নম্বর দেখে রীতিমতো চক্ষুচড়কগাছ শিক্ষা মহলের। এই প্রথমবার এরকম হলো যে একসঙ্গে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন ৭৯ জন এবং একজনও মাধ্যমিকে ফেল করেননি। কিন্তু এই ফলাফল দেখে অনেকেই আপ্লুত হয়ে পড়েছেন। তারপরেই কিছু ভালো করার লক্ষ্য নিয়ে অথবা বাড়ির চাপে অনেকেই বিজ্ঞান বিভাগের দিকে ছুটতে শুরু করেছেন। কিন্তু বিজ্ঞানের মত একটি কঠিন সাবজেক্ট নিয়ে পরবর্তীকালে হাবুডুবু খাওয়া মোটেও ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে সমীচীন নয়। এই কারণেই উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একাদশে বিজ্ঞানবিভাগে ভর্তি হওয়ার জন্য একটি নতুন মাপকাঠি প্রকাশ করা হয়েছে। এই নতুন মাপকাঠিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিজ্ঞানের প্রত্যেকটি বিষয়ে যদি ৪৫ শতাংশ নম্বর না থাকে তাহলে কিন্তু বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়া যাবে না।
এই সমস্ত সাবজেক্টের মধ্যে রয়েছে গণিত অথবা স্ট্যাটিসটিকস, বায়োলজি বা জীবন বিজ্ঞান, ভৌত বিজ্ঞান এবং রসায়ন অথবা দুটোই, ভূগোল, এবং কম্পিউটার সাইন্স। ৪৫ শতাংশ নম্বর যদি এই সব কটি বিষয়ে না থাকে তাহলে কোনো ছাত্রছাত্রী কিন্তু বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হবার সুযোগ পাবে না। এই নিয়ে সংসদ কর্তারা বলছেন, চলতি বছরে যেভাবে মাধ্যমিকে নম্বর দেওয়া হয়েছে তাতে পড়ুয়ারা ঝাকে ঝাকে নম্বর পেয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে যদি কোন মাপকাঠি না থাকে তবে ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়তে হবে পড়ুয়াদের। বিজ্ঞানের মত একটি বেশ কঠিন বিষয় নিয়ে পড়তে গেলে সেই বিষয়টি নিয়ে আগে অবগত হওয়া এবং সেটি নিয়ে সম্যক ধারণা থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। সেরকম ধারণা যদি না থাকে তাহলে পরবর্তীকালে অসুবিধা বাড়বে বৈ কমবে না। এইবারের মাধ্যমিকের অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কারণেই উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পক্ষ থেকে এই নতুন মাপকাঠি নির্দেশ করে দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেকটি স্কুলকে ইতিমধ্যেই এই নতুন মাপকাঠি অবলম্বনে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।