করোনাভাইরাস শুরু হবার সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা বারংবার বলে আসছিলেন হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। কিন্তু নির্বাচন সামনে, তাই তাদের এবার হয়তো তাদের ডায়লগ পরিবর্তন করতে হতে পারে কিছুটা। রসায়নের অভিজ্ঞ অধ্যাপকেরা বলছেন, ভোটের কালি খুব সহজেই হাত থেকে সরে যাবে যদি আপনি ব্যবহার করেন কোন স্যানিটাইজার। আমাদের রাজ্যে মূলত তিন ধরনের স্যানিটাইজার বাজারে উপলব্ধ। প্রথমটি হলো আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল যুক্ত স্যানিটাইজার, জেটি দামে একটু সস্তা। দ্বিতীয় টি হল ইথানল বা ইথাইল অ্যালকোহল স্যানিটাইজার। তৃতীয়টি হলো হাইড্রোজেন পার অক্সাইড যুক্ত স্যানিটাইজার। এই তিন ধরনের স্যানিটাইজার এর মধ্যে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড যুক্ত স্যানিটাইজার খুব তাড়াতাড়ি এই রং তুলে দিতে পারে।
ভোটের কালিতে থাকে সিলভার নাইট্রেট। এই জিনিসটি যখন বাতাসের সংস্পর্শে আসে তখন বিক্রিয়া করে বেগুনি রং ধারণ করে। মাঝেমধ্যেই এই ধরনের রং তুলতে প্রায় এক মাস চলে যায়। তার মধ্যেই এবারে নতুন করে আশঙ্কা বাড়াচ্ছে স্যানিটাইজার। রসায়নের অধ্যাপক জানাচ্ছেন, যদি ভোটের কালি লাগানোর মিনিট দুয়েকের মধ্যে হাতে কেউ স্যানিটাইজার ব্যবহার করে তাহলে ওই ভোটের কালি অত্যন্ত সহজে উঠে যাবে। আর এই মুহূর্তে এই ধরনের স্যানিটাইজার অত্যন্ত বেশি উপলব্ধ বাজারে। তাই যে কেউ ভোটের কালি তুলে দ্বিতীয়বার ভোট দিতে দাঁড়াতেই পারে।
সেই অবস্থায় ছাপ্পা ভোটের সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। অন্যদিকে অ্যালকোহল দুর্মূল্য হবার কারণে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সময় একটি বিশেষ ধরনের তরল ব্যবহার করে সাধারণ মানুষ হাত পরিষ্কার করেছিলেন। ওই তরলটি আসলে একটি কিটোন প্রোডাক্ট এবং সেটার নাম হলো অ্যাসিটোন। এই এসিটোন তরলটি নেলপলিশ রিমুভার হিসেবে অত্যন্ত পরিচিত। এই তরলটি যদি বোতলে করে নিয়ে আসা হয় তাহলে কিন্তু একদম জলের মতো দেখতে লাগে। তাই বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, যদি এবারের নির্বাচনে ছাপ্পা ভোটের সম্ভাবনা একেবারে তাড়াতে হয় তাহলে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে প্রশাসনকে। তারা জানাচ্ছেন, ভোট দেবার মিনিট দুয়েকের মধ্যে যদি কেউ হাতের মধ্যে কিছু না লাগান তাহলে কালির রং উঠে যাবার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই ভোটের আধিকারিকদের কিছুটা হলেও এবারের নির্বাচনে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।