একদিকে কোভিড (Covid-19), অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস (Yaas) জোড়া ফলায় বিদ্ধ রাজ্য। ভরা কোটালের দৌরাত্ম্যে উপকূলবর্তীর বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। নোনা জলের উপচে পড়া স্রোত কোনভাবেই আটকানো সম্ভব হয়নি। সাধারণ মানুষ জীবন বাজি রেখে জল আটকানোর চেষ্টা করেও শেষরক্ষা করতে পারেনি। এমন অবস্থায় রাজ্যের কাছে কোভিড টিকাকরণ রীতিমত চ্যালেঞ্জের বিষয় ছিল। মুখ্যমন্ত্রী আগেই ঘোষণা করেছিলেন ইয়াস মোকাবিলায় তৎপরতার পাশাপাশি কোভিড টিকাকরণে কোনপ্রকার ঢিলেমি চলবে না। কেন্দ্রের তরফেও জানানো হয়েছিল কোভিড মোকাবিলায় টিকাকরণই (Vaccination) একমাত্র বিকল্প। রাজ্য সরকার সে বিষয়ে বাড়তি নজর দিয়েছে। টিকাকরণের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার যে মডেল অনুসরণ করেছে তা আন্তর্জাতিক এবং কেন্দ্র সরকারের তরফে প্রশংসা কুড়িয়েছে।
ক্ষমতায় ফিরেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোভিড মোকাবিলায় বাড়তি জোর দিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে বর্ধমানে রাজ্যে টিকাকরণের এই দ্বৈত মডেল বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। টিকাকরণ প্রক্রিয়াকে দু'টি স্তরে ভাগ করা হয়েছে। কেন্দ্রের টিকার অপ্রতুলতায় রাজ্য সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে খবর। সাধারণ এবং সুপার স্প্রেডার দু'টি ভাগে ভাগ করে তাঁদের আগে টিকাকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। যাঁদের কোভিড আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি এবং যাঁরা সুপার স্প্রেডারের কাজ করেন, তাঁদের আগে টিকাকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। এক্ষেত্রে সমাজের বয়স্ক মানুষ এবং ডাক্তার, নার্স, সাংবাদিক, সরকারি কর্মচারী, হকার, পরিবহণ কর্মচারীদের আগে আগে টিকাকরণের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এই দ্বৈত মডেল প্রশংসা কুড়িয়েছে আন্তর্জাতিক স্তরে। গ্লোবাল অ্যাডভাইসরি বোর্ড এবং কেন্দ্র সরকার এই পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসা করেছে।
গ্লোবাল অ্যাডভাইসরি বোর্ড এই উদ্যোগের প্রশংসা করে জানিয়েছে, সীমাবদ্ধ টিকা যোগানের মধ্যে মমতা সরকারের এই অভূতপূর্ব উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকাকরণে কোভিড মোকাবিলা সহজেই সম্ভব বলে মনে করছে এই বোর্ড। পাশাপাশি কেন্দ্রের তরফে এই মডেল পছন্দ হয়েছে। এই মডেল অনুসরণ করলে অতিমারী নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে করছে কেন্দ্র। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কথা মাথায় রেখে টিকাকরণের কাজ যাতে সমান তালে চলে সেদিকে বাড়তি নজর ছিল সরকারের। এমনকী প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও টিকাকরণের কাজ বন্ধ হয়নি। মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, "টিকাকরণের কাজ অব্যাহত রাখার জন্য স্বাস্থ্যসচিবকে বলা হয়েছে। এই দুর্যোগের কারণে কোথাও যদি কিছু আটকায়, তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।"