বর্ষা এলেই উপকূলবর্তী এলাকার মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে পাড়ি দেয়। অনেক সময় প্রতিকূল আবহাওয়ার ভ্রূকুটিকে উপেক্ষা করেও রূপোলী শষ্যের নেশায় তাঁদের পাড়ি দিতে হয়। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে অনেকেই বেঘোরে প্রাণ হারান। যে সমুদ্র তাঁদের জীবনের একমাত্র অবলম্বন, অনেক সময় এই সমুদ্রেই তাঁদের সলিল সমাধি ঘটে যায়।
তেমনই পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির পেটুয়াঘাট মৎস্যবন্দর থেকে 'মা শীতলা' নামের একটি ট্রলারে যাত্রা করেছিলেন একদল মৎস্যজীবী। মাঝ সমুদ্রে হঠাৎ-ই প্রচন্ড জলের ধাক্কায় ট্রলারটির প্রপেলার খারাপ হয়ে যায়। মাঝ দরিয়ায় প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে তাঁরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এমনকী ক্ষতিগ্রস্ত ট্রলারের পাশে অন্য কোন ট্রলার গিয়েও উদ্ধার করতে পারেনি। এমন অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন রাজ্যের মৎস্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। মৎস্য দফতর উপকূলরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। উপকূলরক্ষী বাহিনী জিপিএস ট্র্যাকারের মাধ্যমে ট্রলারটির লোকেশন জানতে পারে। খবর যায় হলদিয়া উপকূলরক্ষী বাহিনীর কাছে। সঙ্গে সঙ্গে উপকূলরক্ষী বাহিনীর জাহাজ গিয়ে সেই মৎস্যজীবীদের উদ্ধার করেছে বলে সূত্রের খবর।
গত কয়েক দিনে প্রবল বৃষ্টিতে দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগণার অবস্থা ভয়াবহ। বিশেষ করে উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে প্রবল বৃষ্টির কারণে সমুদ্র বা নদীর জলস্তর ক্রমশ বাড়ছে। এদিকে আবহাওয়া দফতরের তরফে সমুদ্রে নামতে বারবার নিষেধ করা হয়েছে। এমনকী ইতিমধ্যে যাঁরা সমুদ্রে গিয়েছিলেন, তাঁদের ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টির জেরে বেশ কয়েকটি জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দিঘা, শঙ্করপুর, মন্দারমণি-সহ উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে জারি হয়েছে সতর্কতা। প্রশাসনের তরফে মাইকিং করে সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি পর্যটকদের হোটেলে গৃহবন্দি থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা, মন্দারমণি, পেটুয়াঘাট এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণার ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ, ফ্রেজারগঞ্জ, নামখানাতে জারি হয়েছে বিশেষ সতর্কতা। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।