'অপরাধ' কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়া। পরিণামে গাছে বেঁধে পিটিয়ে মেরে পরে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। ঘটনা একদিনের নয়। এর আগেও দিনের পর দিন চলত শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার। যা নিয়ে গ্রামে পূর্বে সালিসি সভা হয়েছিল, কিন্তু তাতেও কোন সুরাহা হয়নি। শেষমেশ একজন গৃহবধূকে কেবল কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার 'অপরাধে' পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি মালদহের (Malda)।
ঠিক কী ঘটেছিল? ঘটনাটি মালদহের মহেন্দ্রপুর এলাকার। সূত্রে খবর, হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার মহেন্দ্রপুর গ্রামপঞ্চায়েতের কাগমারি গ্রামের ২৪ বছরের রুকসেবা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয় বারুই গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচলা গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নানের। তাদের একটি বছর দুয়েকের কন্যা সন্তান আছে। রুকসেবা প্রথম কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর থেকেই তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বাড়ছিল। বেশ কয়েক মাস আগে তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন গাছে বেঁধে মারধর করে। যা নিয়ে এলাকায় সালিসি সভা বসে। তাতে স্থানীয় লোকজন রুকসেবার শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের তীব্র ভর্ৎসনাও করেন। তাদের বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমাণা করা হয়। তারপরও থামেনি অত্যাচার। আর যার পরিণতি হল মৃত্যু।
একুশ শতকেও এমন বর্বরোচিত দৃশ্যের সাক্ষী থাকল মালদহের মহেন্দ্রপুর এলাকার মানুষ। কন্যা যে গৃহের লক্ষ্মী একথা ভুলেই গেল তারা। আর কন্যা সন্তান প্রসবের দায় কেবল মায়ের একথাও তারা সগর্বে জানিয়ে হত্যা করল সেই অসহায় গৃহবধূকে। রুকসেবার অসহায় পিতা জানালেন এমন সব মর্মান্তিক কথা। নিজের মেয়েকে ফোনে না পেয়ে এসে দেখলেন মেয়ের ঝুলন্ত দেহ। আর সারা দেহে ক্ষতের চিহ্ন। পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। যদিও ততক্ষণে অভিযুক্তরা চম্পট দিয়েছে। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।