তৃণমূলের প্রাক্তন মহিলা পঞ্চায়েত প্রধানকে গ্রেফতারের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহের মানিকচক থানার নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। জানা যাচ্ছে, এক দলীয় সদস্যের তোলা অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই মহিলা প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৮ সালে আরতী যখন নূরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন তখন তিনি সিপিএমের টিকিটে জয়লাভ করেছিলেন। কিন্তু তারপরে দলবদল করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তৃণমূলের ৯ জন সদস্য তার বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলেছেন। তাদের অভিযোগ ছিল, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে, আবর্জনা আধার নির্মাণ এবং বৃক্ষরোপণ সহ একাধিক প্রকল্পে বহু টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি।
এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় আরো দুর্নীতি হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ। মানিকচকের বিডিওর কাছে তারা নিজেদের অভিযোগ দায়ের করেছেন ইতিমধ্য। তারপর এই তথ্য জানার অধিকার আইনে অভিযোগ দায়ের করা হয় সরাসরি কলকাতা হাইকোর্টে। শেষ পর্যন্ত কলকাতার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে উচ্চ আদালতে তরফ থেকে তৎকালীন জেলাশাসক কৌশিক মুখোপাধ্যায়কে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই তদন্ত করার পরে দেখা যায় একটি ভিডিওতে সত্তিকারের আর্থিক দুর্নীতির তথ্য সামনে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, প্রায় ২৭ লক্ষ টাকার আর্থিক দুর্নীতি করেছেন ওই প্রাক্তন মহিলা পঞ্চায়েত সদস্য।
জানা যায় তার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন সেই সময়কার পঞ্চায়েত নির্মাণ সহায়ক মিলন ঘোষ। দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আরতী এবং মিলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মানিকচকের তৎকালীন বিডিও সুরজিৎ পন্ডিত। আরতী তারপর গা-ঢাকা দিলেও, পরবর্তীতে তিনি আদালতের কাছে নতুন করে আবেদন করেছিলেন। সেই সময় স্থির হয়েছিল, টাকা তছরুপের সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেবেন আরতী। কিন্তু সময় অনেকটা পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত সেই টাকা ফেরত দেননি আরতী। তার ফলে আবারও আরতী এবং মিলনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, শনিবার রাতে আর ওদিকে গ্রেফতার করেছে মানিকচক থানার পুলিশ। আপাতত আরতিকে জেল হেফাজতে রাখা হবে বলে জানা যাচ্ছে।