বিধায়ক হয়েও ঝক্কির শেষ নেই। সংসার সামলানোর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ৪ জওয়ানকে নিজে রেঁধে খাওয়াতে হচ্ছে। স্বামীর নাম ভুল থাকায় মেলেনি আবাস যোজনার ঘর, তাই নিজেদের মাথাগোঁজার ঠাঁই নেই। এদিকে নিরাপত্তা রক্ষীদের আশ্রয় দিতে হিমশিম খাওয়ার মত অবস্থা। বাধ্য হয়ে একজনের নির্মীয়মান বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। নিজের বাড়ির জন্য কেনা দু'টো জানালা এবং একটি দরজা আপাতত নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য ব্যবহার করতে হয়েছে। একদিকে 'নুন আনতে পান্তা ফুরোয়' অবস্থা, তার ওপর বাড়তি নিরাপত্তা গ্রহণ করতে গিয়ে 'অথৈ জলে' বিজেপির নবনির্বাচিত বিধায়ক।
বাঁকুড়ার শালতোড়ের বিজেপির নবনির্বাচিত বিধায়ক চন্দনা বাউরী। একুশের নির্বাচনে বিজেপির বিজিত বিধায়ক। আগে স্বামীর সঙ্গে করতেন রাজমিস্ত্রির পালামির কাজ। বিজেপি এবার তাঁকে প্রার্থী করেছিলেন। চন্দনা এবারের নির্বাচনে জিতে বিধায়কও হয়েছেন। কেন্দ্রের নির্দেশ মোতাবেক তাঁকে নিতে হয়েছে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা। কিন্তু নিরাপত্তা নিতে গিয়ে তিনি পড়েছেন আর এক যাঁতাকলে। বাধ্য হয়ে নিজেই রান্না করে খাওয়াচ্ছেন ৫ নিরাপত্তারক্ষীকে।
অন্যদিকে, একই অবস্থায় পড়েছেন কোচবিহারের তুফানগঞ্জের বিধায়ক মালতি রাভা রায়। দোতলা বাড়ির উপর তলায় ছেলে ও স্বামীকে নিয়ে সংসার। একতলাটা ভাড়া দেওয়া রয়েছে। আপাতত তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের এক ভাড়া বাড়িতে রেখেছেন। ভাড়াটে উঠে গেলে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসবেন। নিরাপত্তারক্ষীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা যতদিন না স্বাভাবিক হচ্ছে ততদিন নিজে রান্না করে খাওয়াচ্ছেন।
বাঁকুড়ার সোনামুখীর বিধায়ক দিবাকর ঘরামি চাষ করে সংসার চালান। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে এতদিন তাই করে আসছিলেন। বিধায়ক হয়ে পেয়েছেন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা। যৌথ পরিবারে ১০ জন সদস্য নিয়ে সংসার। এখন নিরাপত্তা বাহিনী যুক্ত হওয়ায় ১৫ জনের সংসারে খাওয়া-দাওয়া চলছে একসঙ্গে। বিধায়ক ভাতা শুরু হলে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছেন তিনি।
বিজেপি এবারের নির্বাচনে অনেক প্রান্তিক মানুষদের সুযোগ দিয়েছে। তাঁদের অনেকে আবার জিতেছেনও বটে। কিন্তু বিধায়ক হবার পর আনন্দের পাশাপাশি তাঁদের মাথায় এখন বাড়তি চাপ কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ে। তবে দলের সিদ্ধান্ত তাঁরা সবসময় মেনে নিতে প্রস্তুত। তাঁদের কথায়, "এখন সমস্যা হলেও খুব তাড়াতাড়ি তা সমাধান হয়ে যাবে, কিন্তু দলের নির্দেশ মানতে হবে।"