স্বামী-স্ত্রীর সংসার। বিয়ে হয়েছে বেশ কয়েক বছর হল। তাদের দুই সন্তানও আছে। বিবাহিত জীবনের দীর্ঘ পরিসরে হয়তো দু'জনের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না কিংবা বিবাহিত জীবনের ক্লান্তি! এই নিয়ে দু'জনের সঙ্গে প্রায়শই ঝগড়াঝাটির শব্দ পেতেন পাড়ার লোকজন। কিন্তু দু'জনের শেষ পরিণতি যে এমন হতে পারে কেউ আন্দাজও করতে পারেন নি।
নদিয়ার তেহট্টের বেতাই জিতপুরের ঘটনা। এখানেই কৃষ্ণ সরকার এবং কাকলি সরকারের সংসার। দীর্ঘদিন তাদের বিয়ে হয়েছে। ভরা সংসারে দুই সন্তান। ইদানিং তাদের মধ্যে নাকি সাংসারিক কলহ লেগেই ছিল। ঠিক কী কারণ নিয়ে ঝগড়া তা ঠিক স্পষ্ট নয়। গতকাল রাতেও দু'জনের মধ্যে ঝগড়ার শব্দ পেয়েছিলেন পাড়ার লোকজন। প্রতিদিনের ঘটনা ভেবে প্রথমে কেউই কোন গুরুত্ব দেননি।
এদিকে রাত ১২ টা নাগাদ ঘটে গিয়েছে রোমহর্ষক ঘটনা। স্থানীয় একাংশের দাবি, রাত ১২ টা নাগাদ কাকলি সরকার স্বামীর গায়ে আগুন দিয়ে নিজে তাঁকে জড়িয়ে ধরেন। ঘটনাস্থলেই কাকলি সরকারের মৃত্যু হয়। কৃষ্ণ সরকারের শরীরের ৯০ শতাংশের বেশি অগ্নিদগ্ধ। আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঠিক কী ঘটেছিল এদিন? স্থানীয় একাংশ বলছেন, রাতে নিজের সন্তানদের খাইয়ে অন্য ঘরে রেখে আসে কাকলি। তারপর স্বামীর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। নিজে স্বামীকে জড়িয়ে ধরেন। দু'জনের শরীরে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। গোটা বাড়ি কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। পাড়ার লোকজন পোড়া গন্ধ পেয়ে কৃষ্ণ সরকারের বাড়িতে এসে একটি ঘর থেকে আগুন ও ধোঁয়া বেরোতে দেখেন। দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দু'জনের অগ্নিদগ্ধ দেহ দেখে থ এলাকাবাসী।
এমন ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া। পাড়ার লোকজন বলছেন, সংসারে থাকলে ঝগড়া-বিবাদ তো থাকবেই। তাঁদের দু'জনের মধ্যে প্রায়ই নানা বিষয়ে ঝগড়া লেগেই থাকত। তবে এমন পরিণতির কথা কেউই আশা করেননি। পুলিশ এসে কাকলি সরকারের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। কৃষ্ণ সরকার আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।