ভোট আসে ভোট যায়, কিন্তু মানুষের দাবি অপূর্ণই থেকে যায়। কোচবিহারের (Coochbehar) মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি কোচ রাজাদের ইতিহাস পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্তিকরণ। এবার কোচবিহারের প্রখ্যাত রাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের মৃত্যুবার্ষিকীতে সেই সুর ফের চড়াল বিজেপি। বিজেপির তরফে দাবি, বাম অথবা তৃণমূল জমানায় কোচবিহারের রাজাদের সম্মান জানানো হয়নি। যদিও পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, বিজেপি এ নিয়ে রাজনীতি করছে। তৃণমূলের দাবি, পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোচবিহারের ইতিহাস পড়ানো হয়। দাবি এবং পাল্টা দাবির টানাপোড়েনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দুই শিবির।
উল্লেখ্য, কোচবিহার শহরের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। ইতিহাস বলে রাজা বিশ্ব সিংহ এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেন। তবে এই রাজবংশের শ্রেষ্ঠ রাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের জমানায় এই রাজবংশের কৃতিত্ব গোটা দেশ শুধু নয়, বিশ্বের দরবারেও পৌঁছে যায়। আজকের কোচবিহারের সুদৃশ্য রাজবাড়ি তাঁর জমানায় তৈরি হয়েছিল। ইংরেজদের সহায়তায় ভুটানের আগ্রাসন থেকে তিনি কোচবিহারকে রক্ষা করেছিলেন। ১৯১১ সালে রাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ প্রয়াত হন। দেশ ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পরেও কোচবিহারের রাজ পরিবারের শাসন বজায় থাকে। তবে ১৯৪৯ সালের ২৮ অগাস্ট এক চুক্তির মাধ্যমে কোচবিহারের সম্পূর্ণ দায়িত্ব ভারত সরকারের হাতে তুলে দেন তৎকালীন রাজা জগদীপেন্দ্র নারায়ণ। আর ১৯৫০ সালে কোচবিহার পশ্চিমবঙ্গের জেলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।
পশ্চিমবঙ্গের জেলা হিসেবে অন্তর্ভুক্তিকরণের পর থেকেই কোচবিহারের সাধারণ মানুষ-সহ সেই রাজ পরিবারের উত্তরসূরীদের দাবি, সমৃদ্ধ কোচবিহার রাজাদের ইতিহাস পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হোক। সেখানকার সাধারণ মানুষের অভিযোগ, নির্বাচন এলেই সমস্ত রাজনৈতিক দল এই নিয়ে ভোট রাজনীতির খেলায় মেতে ওঠে, কিন্তু বাস্তবে ভোট মিটে গেলে এ নিয়ে কোন আলোচনাই আর হয় না। শনিবার রাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের মৃত্যুবার্ষিকীতে সেই বিষয় নিয়েই ফের সুর চড়াল গেরুয়া শিবির।