মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandyopadhyay) জানিয়েছিলেন পরিস্থিতি ঠিকঠাক থাকলে পুজোর পর স্কুল (School) খুলে দেওয়া হবে। সম্প্রতি স্কুল শিক্ষা দফতরের তৎপরতায় সে কথা আবারও তাৎপর্য পেল মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। কোভিড অতিমারির (Covid-19) জেরে প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলছে। শিক্ষকদের কিছু অফিসিয়াল কাজকর্ম করতে হলেও ক্লাসরুমগুলো পড়ুয়াদের প্রতীক্ষায় অপেক্ষারত। এমন অবস্থায় যদি স্কুল খোলে, তাহলে স্কুলের সার্বিক পরিকাঠামো কেমন অবস্থায় আছে তা জানতে চাইল স্কুল শিক্ষা দফতর। সূত্রের খবর, স্কুলের ক্লাসরুম, শৌচালয়, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, মিড ডে মিল কক্ষ কেমন অবস্থায় আছে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্কুলগুলিকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠাতে নির্দেশ দিল স্কুল শিক্ষা দফতর।
কোভিড অতিমারির জেরে দীর্ঘদিন স্কুলগুলোর ঝাঁপ বন্ধ। মাঝে পরীক্ষামূলকভাবে কিছুদিন নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হলেও করোনার ফের বাড়বাড়ন্তে তা বন্ধ হয়ে যায়। কিছু কিছু স্কুলে অনলাইন ক্লাস হলেও অধিকাংশ সরকারি স্কুলে পড়াশোনার পাঠ প্রায় অথৈ জলে। বিভিন্ন অ্যাক্টিভিটি টেস্টের মাধ্যমে পড়াশোনা হলেও তা যে দায়সারা তা অধিকাংশ অভিভাবকদের মত। এমন অবস্থায় শিবরাত্রির সলতের মতো পড়াশোনা চালু রেখেছে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার এবং প্রাইভেট টিউটরদের একাংশ। তা-ও আবার পরীক্ষা না হওয়ায় প্রায় বন্ধের মুখে। এমন অবস্থায় দীর্ঘদিন পর স্কুল খুললে স্কুলের পরিকাঠামো ক্লাস করার উপযুক্ত কী না, সে একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন। একাধিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুলের শৌচালয়, ক্লাসরুম, বিদ্যুৎ পরিষেবা ঠিক আগের অবস্থায় নেই। কালি ঝুলে ভর্তি ক্লাসরুম পঠন-পাঠনের উপযুক্ত নয়। এমন অবস্থায় স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্কুলগুলোর সার্বিক পরিকাঠামোর পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকী কতটা মেরামতির প্রয়োজন, আনুমানিক কত খরচ হতে পারে তা জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে জানাতে বলা হয়েছে।
এদিকে পুজোর পর নয়, তার আগেই স্কুল খোলার পক্ষপাতী বহু স্কুলের শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, দেশের বহু রাজ্যেই তো পঠন-পাঠন শুরু হয়েছে, তাহলে পশ্চিমবঙ্গে নয় কেন? আর শুরুতে তো পরীক্ষামূলকভাবে উঁচু ক্লাসের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্লাস করা যেত। রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। অন্যান্য অফিস, আদালতের কাজকর্ম স্বাভাবিক নিয়মেই চলছে, তাহলে স্কুল-বা ব্রাত্য থাকে কোন যুক্তিতে! যদিও সাম্প্রতিক একটি পরিসংখ্যান বলছে অভিভাবকদের একাংশ তাঁদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে নিমরাজি। তাঁদের দাবি, স্কুল যদি বাচ্চাদের দায়িত্ব না নেয়, তাহলে তাদের স্কুলে পাঠাই কাদের ভরসায়। তবে সাম্প্রতিক স্কুল শিক্ষা দফতরের তৎপরতা জানান দিচ্ছে যে খুব শীঘ্রই স্কুল খুলতে চলেছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।