জীবিকার প্রয়োজনে মাছ, কাঁকড়াই ভরসা। তাই নিজের জীবন বাজি রেখে কেবল পেট চালানোর তাগিদে সুন্দরবনের (Sundarban) গভীর জঙ্গলে জীবিকার সন্ধানে পা বাড়ান অসংখ্য মানুষ। বিপদ আছে জেনেও যেতে হয়। উপায় নেই! বারবার সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে আসার সৌভাগ্য সকলের থাকে না। কারণ সেই মাছ, কাঁকড়ার জঙ্গলে ওৎ পেতে বসে থাকে হলুদ ডোরাকাটা দক্ষিণরায়। যেকোন সময় ঝাঁপিয়ে পড়লেই ভবলীলা সাঙ্গ!
এবারেও তেমন সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে মাছ, কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন কুলতলির (Kultali) দেউলবাড়ির বাসিন্দা শঙ্কর সর্দার। সঙ্গে ছিলেন তিন সঙ্গী। গন্তব্য কুলতলির বেনিফেলি জঙ্গল। ঘটনাটি সোমবারের। শঙ্কর-সহ তাঁর অন্যান্য সঙ্গীরা বেনিফেলির জঙ্গলে কাঁকড়া ধরছিলেন। রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ভয় তো আছেই। আচমকাই শঙ্করদের নৌকায় হানা দেয় দক্ষিণরায়। নৌকার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আর বাঘের নাগালে থাকা শঙ্কর সর্দারের পিঠের উপর থাবা বসায়। শঙ্করকে প্রায় জঙ্গলে তুলে নিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। ততক্ষণে অন্যান্য সঙ্গীরা বিপদ বুঝে চিৎকার শুরু করেন। আর লাঠি, বৈঠা নিয়ে আঘাত করতে থাকেন। তাতে বিপদ বুঝে বাঘ শঙ্করকে ছেড়ে দিয়ে চম্পট দেয়।
এদিকে ততক্ষণে শঙ্কর সর্দারের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। নৌকার খোলে রক্তের বন্যা। শঙ্করের সঙ্গীরা দ্রুত ফিরে আসেন। প্রথমে ভর্তি করা হয় কুলতলি গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে খবর। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে শঙ্কর সর্দারের। তাছাড়া মাথায় এবং পিঠে গুরুতর জখম হয়েছেন। এদিকে বনদফতর গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। শঙ্করদের বৈধ কাগজপত্র ছিল কী না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই বসিরহাট রেঞ্জের বাগনা বীটের অন্তর্গত ঝিলা এক নম্বর জঙ্গলে বাঘের হানায় মৃত্যু হয়েছিল একজন মৎস্যজীবীর। স্থানীয় সূত্রে খবর, অরবিন্দ বিশ্বাস নামের ওই মৎস্যজীবী-সহ আরও তিন মৎস্যজীবী রবিবার সকালে কাঁকড়া ধরতে গভীর জঙ্গলে গিয়েছিলেন। বসিরহাটের পর ফের কুলতলি। দক্ষিণরায়ের আতঙ্কে কাঁপছে সুন্দরবন।